০৬:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জমিতেই মরছে মরিচ গাছ অন্য সবজিরও ক্ষতির শঙ্কা

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি।।
ঝিনাইদহে টানা বৃষ্টি আর বৈরী আবহাওয়ার মারাত্মক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে কৃষিতে। এরই মধ্যে জমিতে পানি জমে মরতে শুরু করেছে মরিচ গাছ। মুলা, শিম, লাউসহ অন্যান্য সবজিতেও পোকামাকড়ের আক্রমণ বাড়ছে। নিচু এলাকার জমিতে সমস্যা সবচেয়ে বেশি। এমন অবস্থা অব্যাহত থাকলে সব সবজির ফলন কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা কৃষকের; তাতে বাজারে দামও কয়েক গুণ বৃদ্ধির শঙ্কা করছেন তারা।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নগরবাথান, হলিধানী, বাজার গোপালপুর, ডাকবাংলো, বেড়াশুলাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সবজি চাষিরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন। এসব এলাকায় কাঁচামরিচ, শিম, লাউ, পটোল, বেগুন, শসা, মুলাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ হয়। জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে সদর উপজেলায় সবজির আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৭৪০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে মরিচ ৫২৫ হেক্টর, লাউ ১২৯ হেক্টর, পটোল ৮২ হেক্টর, গ্রীষ্মকালীন শিম ২৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
কৃষকরা জানান, গত প্রায় এক মাস ধরে আবহাওয়ার বৈরিতা দেখা যাচ্ছে। কখনও মুষলধারে আবার কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। কয়েকদিন মাঝে রোদ হলেও আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এতে সবজি ক্ষেতে পানি জমে থাকছে। গাছের গোড়ার মাটি স্যাঁতসেতে থাকায় ছত্রাক জাতীয় রোগসহ ফসলে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে রয়েছে কাঁচামরিচ গাছ। নগরবাথান, হলিধানী, বাজার গোপালপুর এলাকার অনেক গাছই মরে গেছে। কোথাও আবার মরিচ গাছের পাতা কুঁচকে শুকিয়ে যাচ্ছে, কমে যাচ্ছে ফলন। বৃষ্টির কারণে শিমের ফুল ঝরে যাচ্ছে, পাতা শুকানো রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মুলা গাছ।
হলিধানী গ্রামের হুজুর আলী বলেন, ২০ শতক জমিতে ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে মরিচ গাছ লাগিয়েছিলাম। মাত্র ৩০ হাজার টাকার মরিচ বিক্রি করেছি। এর পর হঠাৎ গাছের গোড়ায় পচন লাগে। দোকান থেকে এনে ওষুধ দিয়েছিলাম; কিন্তু কোনো কাজে আসেনি। সব গাছ মরে গেছে।
একই এলাকার কৃষক রুবেল হোসেন বলেন, আবহাওয়ার কারণে অনেকের মরিচ গাছ মরে যাচ্ছে। ফলে কেউ কেউ তাড়াহুড়ো করে মরিচ তুলে ফেলছে। এমন চললে বাজারে মরিচের সংকট দেখা দেবে, তাতে বাজারে দাম বাড়বে।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর-এ-নবী বলেন, ক্ষেতের পানি দ্রুত অপসারণ করা না গেলে মরিচ গাছে ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে। মারা যেতে পারে অন্যান্য সবজি গাছ। এ জন্য জমির পানি দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। গাছের গোড়ায় স্প্রে করতে হবে কার্বেনডাইজিন গ্রুপের ছত্রাকনাশক। মরিচে কোথাও কোথাও পোকামাকড়ের আক্রমণ হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কৃষক যদি পরিমিত মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করেন, তাহলে উপকার পাবেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আন্দোলনকারীদের সংযত থাকার আহ্বান নেপালের সেনাপ্রধানের

জমিতেই মরছে মরিচ গাছ অন্য সবজিরও ক্ষতির শঙ্কা

Update Time : ১২:৪২:৩৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ অগাস্ট ২০২৪

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি।।
ঝিনাইদহে টানা বৃষ্টি আর বৈরী আবহাওয়ার মারাত্মক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে কৃষিতে। এরই মধ্যে জমিতে পানি জমে মরতে শুরু করেছে মরিচ গাছ। মুলা, শিম, লাউসহ অন্যান্য সবজিতেও পোকামাকড়ের আক্রমণ বাড়ছে। নিচু এলাকার জমিতে সমস্যা সবচেয়ে বেশি। এমন অবস্থা অব্যাহত থাকলে সব সবজির ফলন কমে যেতে পারে বলে আশঙ্কা কৃষকের; তাতে বাজারে দামও কয়েক গুণ বৃদ্ধির শঙ্কা করছেন তারা।
ঝিনাইদহ সদর উপজেলার নগরবাথান, হলিধানী, বাজার গোপালপুর, ডাকবাংলো, বেড়াশুলাসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সবজি চাষিরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন। এসব এলাকায় কাঁচামরিচ, শিম, লাউ, পটোল, বেগুন, শসা, মুলাসহ বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ হয়। জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে সদর উপজেলায় সবজির আবাদ হয়েছে ১ হাজার ৭৪০ হেক্টর জমিতে। এর মধ্যে মরিচ ৫২৫ হেক্টর, লাউ ১২৯ হেক্টর, পটোল ৮২ হেক্টর, গ্রীষ্মকালীন শিম ২৫ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে।
কৃষকরা জানান, গত প্রায় এক মাস ধরে আবহাওয়ার বৈরিতা দেখা যাচ্ছে। কখনও মুষলধারে আবার কখনও গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি হচ্ছে। কয়েকদিন মাঝে রোদ হলেও আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। এতে সবজি ক্ষেতে পানি জমে থাকছে। গাছের গোড়ার মাটি স্যাঁতসেতে থাকায় ছত্রাক জাতীয় রোগসহ ফসলে বিভিন্ন রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে রয়েছে কাঁচামরিচ গাছ। নগরবাথান, হলিধানী, বাজার গোপালপুর এলাকার অনেক গাছই মরে গেছে। কোথাও আবার মরিচ গাছের পাতা কুঁচকে শুকিয়ে যাচ্ছে, কমে যাচ্ছে ফলন। বৃষ্টির কারণে শিমের ফুল ঝরে যাচ্ছে, পাতা শুকানো রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মুলা গাছ।
হলিধানী গ্রামের হুজুর আলী বলেন, ২০ শতক জমিতে ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে মরিচ গাছ লাগিয়েছিলাম। মাত্র ৩০ হাজার টাকার মরিচ বিক্রি করেছি। এর পর হঠাৎ গাছের গোড়ায় পচন লাগে। দোকান থেকে এনে ওষুধ দিয়েছিলাম; কিন্তু কোনো কাজে আসেনি। সব গাছ মরে গেছে।
একই এলাকার কৃষক রুবেল হোসেন বলেন, আবহাওয়ার কারণে অনেকের মরিচ গাছ মরে যাচ্ছে। ফলে কেউ কেউ তাড়াহুড়ো করে মরিচ তুলে ফেলছে। এমন চললে বাজারে মরিচের সংকট দেখা দেবে, তাতে বাজারে দাম বাড়বে।
সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নূর-এ-নবী বলেন, ক্ষেতের পানি দ্রুত অপসারণ করা না গেলে মরিচ গাছে ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে। মারা যেতে পারে অন্যান্য সবজি গাছ। এ জন্য জমির পানি দ্রুত নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করতে হবে। গাছের গোড়ায় স্প্রে করতে হবে কার্বেনডাইজিন গ্রুপের ছত্রাকনাশক। মরিচে কোথাও কোথাও পোকামাকড়ের আক্রমণ হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে কৃষক যদি পরিমিত মাত্রায় কীটনাশক ব্যবহার করেন, তাহলে উপকার পাবেন।