০৩:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছিলেন।

সবুজদিন ডেস্ক।।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, একটি বিষয় ছিল খুব দুঃখজনক। প্রধান বিচারপতি হওয়ার পর ছাত্রলীগের কাছ থেকে ফুলের শুভেচ্ছা নিয়েছিলেন তিনি। এটা আমার কাছে মনে হয়েছে আচরণবিধি লঙ্ঘন। এটা খুব ভালো একটা ইম্প্রেশন দেয় না। ডিবির প্রধান হারুনকে নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। প্রধান বিচারপতি তার কাছ থেকেও স্বর্ণের তরবারি উপহার নিয়েছিলেন।
শনিবার (১০ আগস্ট) সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। আসিফ নজরুল বলেন, ছাত্র-জনতার একটি স্ট্যাটাস দেখেছি আমি। সেখানে আসিফ মাহমুদ বলেছেন, প্রধান বিচারপতি কোনো আলোচনা না করেই ফুল কোর্ট মিটিং আহ্বান করেছেন। মনে করা হচ্ছে স্বৈরাচারী সরকারের পরাজিত যে শক্তি তাদের পক্ষের একটি মুখ তিনি।
প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ ইস্যুতে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে এতদিন ক্ষমতায় থাকা শক্তিশালী নির্মম সরকারের প্রধানকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। ওই রকম একটা জায়গা থেকে চাপ আসা বা প্রত্যাশা ব্যক্ত করার পর প্রধান বিচারপতির কী করা উচিত সেটা তার ওপরই ছেড়ে দিলাম। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের গণ আন্দোলন থেকে পদত্যাগের দাবি উঠলে সেটাকে কতটুকু সম্মান করতে হয় সেটা আমাদের প্রধান বিচারপতি বুঝতে পারবেন বলে আমার প্রত্যাশা থাকবে।
আসিফ নজরুল বলেন, আপনাদের মনে রাখতে হবে এটা ছাত্র-জনতার বিপ্লব। এই আন্দোলনে অসংখ্য ছাত্রের প্রাণ ঝরেছে। এই আন্দোলনে আমরা এখনো যখন আবু সাইদ, মুগ্ধ, ফাইয়াজ বা ছয় বছরের শিশু রিয়া গোপের কথা শুনি বা পড়ি এখনো আমরা খুবই আবেগ আপ্লুত হয়ে যাই। এই আবেগকে নেতৃত্ব দিচ্ছে আমাদের সমন্বয়করা।
এই উপদেষ্টা আরও বলেন, হারুন এই আন্দোলনে আমাদের ছাত্রদেরকে আটকে রেখে নির্যাতনের মূল ব্যক্তি ছিলেন। প্রধান বিচারপতি যখন ডিবি প্রধানের কাছ থেকে সোনার তরবারি উপহার নিয়েছিলেন আমার তখন খুব অবাক লেগেছিলো। আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বিদেশে গেলে তার (প্রধান বিচারপতির) বাসায় থাকেন। এসব বিষয়ে তো তাকে নিয়ে অনেক বিতর্ক ছিল। আন্দোলন চলাকালে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, এতো কীসের আন্দোলন। ছাত্র জনতার পক্ষ থেকে তার পদত্যাগের দাবি উঠেছিল। আজকে বোধহয় সেটা আবারো বলা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা মনে করি সুপ্রিম কোর্ট আমাদের মানবাধিকার রক্ষণের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান। ছাত্র জনতার যে গণ আন্দোলন বা গণ অভ্যুত্থান এটার বিপরীতে কাউকে দাঁড় করানো উচিত না। আপনারা ইতোমধ্যে দেখেছেন দেশের পুলিশ বাহিনীকে ছাত্র জনতার মুখোমুখি করার পরিণাম কি হয়েছে। এমন কিছু হোক আমরা কখনোই চাই না। আমরা আশা করি, সবার যেন শুভ বুদ্ধির উদয় হয়। ছাত্র-জনতার যে গণ আন্দোলন হয়েছে এটার আকাঙ্ক্ষার প্রতি যেন আমরা সম্মান জানাই।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আন্দোলনকারীদের সংযত থাকার আহ্বান নেপালের সেনাপ্রধানের

প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছিলেন।

Update Time : ১০:১৩:৩৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৪

সবুজদিন ডেস্ক।।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছিলেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, একটি বিষয় ছিল খুব দুঃখজনক। প্রধান বিচারপতি হওয়ার পর ছাত্রলীগের কাছ থেকে ফুলের শুভেচ্ছা নিয়েছিলেন তিনি। এটা আমার কাছে মনে হয়েছে আচরণবিধি লঙ্ঘন। এটা খুব ভালো একটা ইম্প্রেশন দেয় না। ডিবির প্রধান হারুনকে নিয়ে নানা প্রশ্ন রয়েছে। প্রধান বিচারপতি তার কাছ থেকেও স্বর্ণের তরবারি উপহার নিয়েছিলেন।
শনিবার (১০ আগস্ট) সচিবালয়ে আইন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। আসিফ নজরুল বলেন, ছাত্র-জনতার একটি স্ট্যাটাস দেখেছি আমি। সেখানে আসিফ মাহমুদ বলেছেন, প্রধান বিচারপতি কোনো আলোচনা না করেই ফুল কোর্ট মিটিং আহ্বান করেছেন। মনে করা হচ্ছে স্বৈরাচারী সরকারের পরাজিত যে শক্তি তাদের পক্ষের একটি মুখ তিনি।
প্রধান বিচারপতির পদত্যাগ ইস্যুতে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে এতদিন ক্ষমতায় থাকা শক্তিশালী নির্মম সরকারের প্রধানকে পালিয়ে যেতে হয়েছে। ওই রকম একটা জায়গা থেকে চাপ আসা বা প্রত্যাশা ব্যক্ত করার পর প্রধান বিচারপতির কী করা উচিত সেটা তার ওপরই ছেড়ে দিলাম। তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের গণ আন্দোলন থেকে পদত্যাগের দাবি উঠলে সেটাকে কতটুকু সম্মান করতে হয় সেটা আমাদের প্রধান বিচারপতি বুঝতে পারবেন বলে আমার প্রত্যাশা থাকবে।
আসিফ নজরুল বলেন, আপনাদের মনে রাখতে হবে এটা ছাত্র-জনতার বিপ্লব। এই আন্দোলনে অসংখ্য ছাত্রের প্রাণ ঝরেছে। এই আন্দোলনে আমরা এখনো যখন আবু সাইদ, মুগ্ধ, ফাইয়াজ বা ছয় বছরের শিশু রিয়া গোপের কথা শুনি বা পড়ি এখনো আমরা খুবই আবেগ আপ্লুত হয়ে যাই। এই আবেগকে নেতৃত্ব দিচ্ছে আমাদের সমন্বয়করা।
এই উপদেষ্টা আরও বলেন, হারুন এই আন্দোলনে আমাদের ছাত্রদেরকে আটকে রেখে নির্যাতনের মূল ব্যক্তি ছিলেন। প্রধান বিচারপতি যখন ডিবি প্রধানের কাছ থেকে সোনার তরবারি উপহার নিয়েছিলেন আমার তখন খুব অবাক লেগেছিলো। আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ বিদেশে গেলে তার (প্রধান বিচারপতির) বাসায় থাকেন। এসব বিষয়ে তো তাকে নিয়ে অনেক বিতর্ক ছিল। আন্দোলন চলাকালে তিনি মন্তব্য করেছিলেন, এতো কীসের আন্দোলন। ছাত্র জনতার পক্ষ থেকে তার পদত্যাগের দাবি উঠেছিল। আজকে বোধহয় সেটা আবারো বলা হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, আমরা মনে করি সুপ্রিম কোর্ট আমাদের মানবাধিকার রক্ষণের সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান। ছাত্র জনতার যে গণ আন্দোলন বা গণ অভ্যুত্থান এটার বিপরীতে কাউকে দাঁড় করানো উচিত না। আপনারা ইতোমধ্যে দেখেছেন দেশের পুলিশ বাহিনীকে ছাত্র জনতার মুখোমুখি করার পরিণাম কি হয়েছে। এমন কিছু হোক আমরা কখনোই চাই না। আমরা আশা করি, সবার যেন শুভ বুদ্ধির উদয় হয়। ছাত্র-জনতার যে গণ আন্দোলন হয়েছে এটার আকাঙ্ক্ষার প্রতি যেন আমরা সম্মান জানাই।