০৬:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রেমের টানে খুলনায় আসা অস্ট্রেলিয়ার সেই চিত্রশিল্পীর মৃত্যু

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৭:২৫:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৪
  • ৪৮৫ Time View

প্রেমের টানে খুলনায় আসা অস্ট্রেলিয়ার চিত্রশিল্পী ম্যালকম কেইথ আরনল্ড (৭৬) মৃত্যুবরণ করেছেন। বুধবার সকাল ৬টার দিকে সোনাডাঙ্গা এলাকার ভাড়া বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন।

নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশের ওসি তদন্ত মো. আমিরুল ইসলাম জানান, সংবাদ পেয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়। একইসঙ্গে অ্যাম্বাসিতে ডকুমেন্টস পাঠানো হয়েছে। অ্যাম্বাসি থেকে মরদেহ দাফনের অনুমতি দিয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী তার পরিবারকে জানানো হয়েছে। তারা স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছ থেকে কাগজপত্র নিয়ে বসুপাড়া কবরস্থানে মরদেহ দাফন করবেন।

ম্যালকমের স্ত্রী হালিমা বেগম বলেন, মঙ্গলবার রাতের খাবার ও ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। ভোরে তার ঘন ঘন শ্বাস নেওয়ার শব্দ শুনতে পেয়ে দৌড়ে যাই। তখন তিনি মুখের স্প্রে দিতে বলেন। কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়। তবুও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা। হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা ছিল তার।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে হালিমা বেগম বলেন, খুব ভালো মনের মানুষ ছিলেন তিনি। আমার জন্য ইসলাম ধর্মও গ্রহণ করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ায় তার পরিবার রয়েছে। আমি বলতাম আপনি অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যান। কিন্তু ম্যালকম বলতেন তুমি ছাড়া আমার খেয়াল কেউ রাখতে পারবে না। আমি এ দেশেই থাকব। এমনকি মারা গেলেও এই দেশের মাটিতে আমাকে কবর দিও।

হালিমা বেগম আরও বলেন, আমি অস্ট্রেলিয়ায় তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছে বাংলাদেশে তাকে দাফন করলে সমস্যা নেই। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানিয়েছি। তারা অস্ট্রেলিয়া অ্যাম্বাসিকে জানিয়েছেন। সেখান থেকে অনুমতিও পেয়েছি। কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন সেগুলো সংগ্রহ করে বসুপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হবে। তবে এখনও সময় নির্ধারণ করা হয়নি।

হালিমা বেগম জানান, প্রথম স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর তিনি মোংলায় ওয়ার্ল্ড ভিশনে কাজ করতেন। ২০০১ সালে ম্যালকম মোংলায় এলে তার সঙ্গে পরিচয় হয়। হালিমার বাড়ি বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার পেড়িখালি গ্রামে। পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ম্যালকমকে চিঠি পাঠান। ২০০৩ সালে ম্যালকম বাংলাদেশে এসে তার চিকিৎসা করান। এরপর ম্যালকম তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তিনি ম্যালকমকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের কথা বলেন। ম্যালকম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ২০০৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে বিয়ে করেন।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আন্দোলনকারীদের সংযত থাকার আহ্বান নেপালের সেনাপ্রধানের

প্রেমের টানে খুলনায় আসা অস্ট্রেলিয়ার সেই চিত্রশিল্পীর মৃত্যু

Update Time : ০৭:২৫:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ জানুয়ারী ২০২৪

প্রেমের টানে খুলনায় আসা অস্ট্রেলিয়ার চিত্রশিল্পী ম্যালকম কেইথ আরনল্ড (৭৬) মৃত্যুবরণ করেছেন। বুধবার সকাল ৬টার দিকে সোনাডাঙ্গা এলাকার ভাড়া বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। তিনি দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন।

নগরীর সোনাডাঙ্গা মডেল থানা পুলিশের ওসি তদন্ত মো. আমিরুল ইসলাম জানান, সংবাদ পেয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে জানানো হয়। একইসঙ্গে অ্যাম্বাসিতে ডকুমেন্টস পাঠানো হয়েছে। অ্যাম্বাসি থেকে মরদেহ দাফনের অনুমতি দিয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা অনুযায়ী তার পরিবারকে জানানো হয়েছে। তারা স্থানীয় কাউন্সিলরের কাছ থেকে কাগজপত্র নিয়ে বসুপাড়া কবরস্থানে মরদেহ দাফন করবেন।

ম্যালকমের স্ত্রী হালিমা বেগম বলেন, মঙ্গলবার রাতের খাবার ও ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। ভোরে তার ঘন ঘন শ্বাস নেওয়ার শব্দ শুনতে পেয়ে দৌড়ে যাই। তখন তিনি মুখের স্প্রে দিতে বলেন। কিছুক্ষণ পর তার মৃত্যু হয়। তবুও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন বলে জানিয়েছে চিকিৎসকরা। হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা ছিল তার।

কান্নাজড়িত কণ্ঠে হালিমা বেগম বলেন, খুব ভালো মনের মানুষ ছিলেন তিনি। আমার জন্য ইসলাম ধর্মও গ্রহণ করেছিলেন। অস্ট্রেলিয়ায় তার পরিবার রয়েছে। আমি বলতাম আপনি অস্ট্রেলিয়ায় ফিরে যান। কিন্তু ম্যালকম বলতেন তুমি ছাড়া আমার খেয়াল কেউ রাখতে পারবে না। আমি এ দেশেই থাকব। এমনকি মারা গেলেও এই দেশের মাটিতে আমাকে কবর দিও।

হালিমা বেগম আরও বলেন, আমি অস্ট্রেলিয়ায় তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছে বাংলাদেশে তাকে দাফন করলে সমস্যা নেই। বিষয়টি থানা পুলিশকে জানিয়েছি। তারা অস্ট্রেলিয়া অ্যাম্বাসিকে জানিয়েছেন। সেখান থেকে অনুমতিও পেয়েছি। কিছু কাগজপত্র প্রয়োজন সেগুলো সংগ্রহ করে বসুপাড়া কবরস্থানে দাফন করা হবে। তবে এখনও সময় নির্ধারণ করা হয়নি।

হালিমা বেগম জানান, প্রথম স্বামীর সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন হওয়ার পর তিনি মোংলায় ওয়ার্ল্ড ভিশনে কাজ করতেন। ২০০১ সালে ম্যালকম মোংলায় এলে তার সঙ্গে পরিচয় হয়। হালিমার বাড়ি বাগেরহাট জেলার রামপাল উপজেলার পেড়িখালি গ্রামে। পরে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে ম্যালকমকে চিঠি পাঠান। ২০০৩ সালে ম্যালকম বাংলাদেশে এসে তার চিকিৎসা করান। এরপর ম্যালকম তাকে বিয়ের প্রস্তাব দিলে তিনি ম্যালকমকে ইসলাম ধর্ম গ্রহণের কথা বলেন। ম্যালকম ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে ২০০৪ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি তাকে বিয়ে করেন।