০৩:৩০ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আমের বীজ ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিকের বিকল্প হতে পারে

সবুজদিন ডেস্ক।।
আমের আঁটির বীজ থেকে প্রাপ্ত অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদানে মানবদেহ ও পশু-পাখিতে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর বলে প্রাথমিক সফলতা পেয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ১১টায় বাকৃবি সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে গবেষক দলের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োজলি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. গোলজার হোসেন এ তথ্য জানান।
গবেষক দলের অন্য সদস্যরা হলেন, মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. সুকুমার সাহা, ফিজিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শারমিন আক্তার, কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. বিপ্লব কুমার সাহা, স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী রাহীলা জান্নাত সাদিয়া, চন্দন সিকদার, আনন্দ মজুমদার, মোসলেমা জাহান মৌ এবং নাজমুল হাসান সিয়াম।
অধ্যাপক মো. গোলজার হোসেন বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়াকে জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ভেষজ ওষুধগুলো সিনথেটিক ওষুধের চেয়ে নিরাপদ, সুবিধাজনক ও সাশ্রয়ী। তবে বাংলাদেশে এ নিয়ে তেমন কোনো গবেষণা হয়নি। এ কারণেই ভেষজ উপাদান থেকে অ্যান্টিবায়োটিক তৈরির গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ শুরু করা হয়। বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে আম উৎপাদিত হয় এবং এর বীজ সাধারণত ফেলে দেওয়া হয়। এই বীজকে কোনোভাবে কাজে লাগানো যায় কি না, সেটি দেখার জন্য বীজ থেকে একটি নির্যাস তৈরি করা হয়।
প্রধান গবেষক আরও জানান, এই নির্যাস পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে যে এটি কিছু ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর। এরপর ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত ইঁদুরের ওপর এই নির্যাস প্রয়োগ করলে দেখা যায়, এই নির্যাস ওই সব ব্যাকটেরিয়ার কোষ ধ্বংস করতে সক্ষম। পাশাপাশি এটি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা তৈরি বায়োফিল্মও ধ্বংস করতে পারে। তবে উচ্চমাত্রায় এই নির্যাস প্রয়োগে ইঁদুরগুলোর যকৃৎ (লিভার) ও বৃক্কে (কিডনিতে) সামান্য পরিবর্তন দেখা গেলেও উল্লেখযোগ্য কোনো খারাপ লক্ষণ দেখা যায়নি। অর্থাৎ এই নির্যাসে তেমন কোনো বিষাক্ত উপাদান নেই বললেই চলে। তবে বীজের ঠিক কোন উপাদানের জন্য এটি ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে, সেটি নির্ধারণের জন্য উচ্চতর গবেষণার প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক সুকুমার সাহা বলেন, আমের বীজের ওই সক্রিয় উপাদানটি বের করার জন্য এখন উচ্চতর গবেষণা করতে হবে। যে সক্রিয় উপাদানটি ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করেছে, সেটি যদি চিহ্নিত করা যায়, তবে বর্তমানে এই প্রাথমিক নির্যাসের যে বিষাক্ততা আছে, সেটির প্রায় ৯৯ দশমিক ৯৯ ভাগ দূরীভূত হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

জীববৈচিত্রে সমৃদ্ধ সুন্দরবন সুন্দর থাকুক

আমের বীজ ক্ষতিকর অ্যান্টিবায়োটিকের বিকল্প হতে পারে

Update Time : ০৬:৩৮:২০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ অক্টোবর ২০২৪

সবুজদিন ডেস্ক।।
আমের আঁটির বীজ থেকে প্রাপ্ত অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল উপাদানে মানবদেহ ও পশু-পাখিতে বিভিন্ন রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর বলে প্রাথমিক সফলতা পেয়েছেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) একদল গবেষক।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ১১টায় বাকৃবি সাংবাদিক সমিতির কার্যালয়ে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে গবেষক দলের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োজলি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. গোলজার হোসেন এ তথ্য জানান।
গবেষক দলের অন্য সদস্যরা হলেন, মাইক্রোবায়োলজি অ্যান্ড হাইজিন বিভাগের অধ্যাপক ড. সুকুমার সাহা, ফিজিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. শারমিন আক্তার, কৃষি রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. বিপ্লব কুমার সাহা, স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী রাহীলা জান্নাত সাদিয়া, চন্দন সিকদার, আনন্দ মজুমদার, মোসলেমা জাহান মৌ এবং নাজমুল হাসান সিয়াম।
অধ্যাপক মো. গোলজার হোসেন বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) অ্যান্টিবায়োটিক প্রতিরোধী ব্যাকটেরিয়াকে জনস্বাস্থ্যের জন্য একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছে। বিশ্বব্যাপী বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, ভেষজ ওষুধগুলো সিনথেটিক ওষুধের চেয়ে নিরাপদ, সুবিধাজনক ও সাশ্রয়ী। তবে বাংলাদেশে এ নিয়ে তেমন কোনো গবেষণা হয়নি। এ কারণেই ভেষজ উপাদান থেকে অ্যান্টিবায়োটিক তৈরির গবেষণার ওপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ শুরু করা হয়। বাংলাদেশে প্রচুর পরিমাণে আম উৎপাদিত হয় এবং এর বীজ সাধারণত ফেলে দেওয়া হয়। এই বীজকে কোনোভাবে কাজে লাগানো যায় কি না, সেটি দেখার জন্য বীজ থেকে একটি নির্যাস তৈরি করা হয়।
প্রধান গবেষক আরও জানান, এই নির্যাস পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে যে এটি কিছু ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কার্যকর। এরপর ব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত ইঁদুরের ওপর এই নির্যাস প্রয়োগ করলে দেখা যায়, এই নির্যাস ওই সব ব্যাকটেরিয়ার কোষ ধ্বংস করতে সক্ষম। পাশাপাশি এটি ব্যাকটেরিয়া দ্বারা তৈরি বায়োফিল্মও ধ্বংস করতে পারে। তবে উচ্চমাত্রায় এই নির্যাস প্রয়োগে ইঁদুরগুলোর যকৃৎ (লিভার) ও বৃক্কে (কিডনিতে) সামান্য পরিবর্তন দেখা গেলেও উল্লেখযোগ্য কোনো খারাপ লক্ষণ দেখা যায়নি। অর্থাৎ এই নির্যাসে তেমন কোনো বিষাক্ত উপাদান নেই বললেই চলে। তবে বীজের ঠিক কোন উপাদানের জন্য এটি ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে, সেটি নির্ধারণের জন্য উচ্চতর গবেষণার প্রয়োজন।
সংবাদ সম্মেলনে অধ্যাপক সুকুমার সাহা বলেন, আমের বীজের ওই সক্রিয় উপাদানটি বের করার জন্য এখন উচ্চতর গবেষণা করতে হবে। যে সক্রিয় উপাদানটি ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করেছে, সেটি যদি চিহ্নিত করা যায়, তবে বর্তমানে এই প্রাথমিক নির্যাসের যে বিষাক্ততা আছে, সেটির প্রায় ৯৯ দশমিক ৯৯ ভাগ দূরীভূত হবে।