০৭:৫৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে জামায়াতের যে আলোচনা হলো

সবুজদিন রিপোর্ট।।
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঢাকাস্থ দূতাবাসে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারা এই বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান নেতৃত্ব দেন, এবং দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

বৈঠক শেষে ডা. তাহের জানান, আলোচনার মূল বিষয় ছিল বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে দেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন। তিনি বলেন, জামায়াতের পক্ষ থেকে ইইউ রাষ্ট্রদূতদের জানানো হয়েছে যে, সকল রাজনৈতিক দল এক হয়ে কাজ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে এবং তারা চাইছে সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।

বৈঠকে বিশেষভাবে আলোচনা হয়েছে প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতির ওপর। জামায়াতের নেতারা জানান, নির্বাচনে সঠিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে পিআর পদ্ধতির গুরুত্ব অপরিসীম। তারা উল্লেখ করেন, ঐকমত্য কমিশন সম্প্রতি ৩১টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে এবং এর মধ্যে ২৬টি দল পিআর পদ্ধতির পক্ষে মত দিয়েছে। তবে, সংসদের উচ্চ এবং নিম্ন কক্ষের মধ্যে কিছু মতবিরোধ রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। জামায়াতের দাবি, পিআর পদ্ধতি কার্যকর হলে জাতীয় নির্বাচনে কোনো ধরনের গোলমাল বা অনিয়ম হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না, যা ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।

ডা. তাহের আরও বলেন, “ফেয়ার নির্বাচন হবার পরেও ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে যে টালবাহানা হয়েছে, সেটা মেনে নেওয়া যায় না। পিআর পদ্ধতি চালু হলে জাতীয় নির্বাচনে এমন পরিস্থিতি হবে না, এটাই আমাদের বিশ্বাস।” জামায়াত নেতার মতে, ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে, তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, এই বিষয়ে দ্রুত আইনি ভিত্তি তৈরি হবে।

নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য জামায়াতের পক্ষ থেকে উদার মানসিকতা এবং সকলের মতামতের প্রতিফলন নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। জামায়াতের নেতারা বলেন, জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে আরো শক্তিশালী করবে।

এ বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং নির্বাচনী সংস্কারের ক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান আরও স্পষ্ট হলো, যেখানে তারা সকল রাজনৈতিক দলের মতামতের সমন্বয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের আশা প্রকাশ করেছে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে নিরাপদ সড়ক দিবসের আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত

ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে জামায়াতের যে আলোচনা হলো

Update Time : ০৬:৫৬:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সবুজদিন রিপোর্ট।।
বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আগামী জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ঢাকাস্থ দূতাবাসে জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতারা এই বৈঠকে অংশ নেন। বৈঠকে জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান নেতৃত্ব দেন, এবং দলটির নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য উপস্থাপন করেন।

বৈঠক শেষে ডা. তাহের জানান, আলোচনার মূল বিষয় ছিল বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি, বিশেষ করে দেশের আগামী জাতীয় নির্বাচন। তিনি বলেন, জামায়াতের পক্ষ থেকে ইইউ রাষ্ট্রদূতদের জানানো হয়েছে যে, সকল রাজনৈতিক দল এক হয়ে কাজ করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে এবং তারা চাইছে সুষ্ঠু, অবাধ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক।

বৈঠকে বিশেষভাবে আলোচনা হয়েছে প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন (পিআর) পদ্ধতির ওপর। জামায়াতের নেতারা জানান, নির্বাচনে সঠিক প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে পিআর পদ্ধতির গুরুত্ব অপরিসীম। তারা উল্লেখ করেন, ঐকমত্য কমিশন সম্প্রতি ৩১টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছে এবং এর মধ্যে ২৬টি দল পিআর পদ্ধতির পক্ষে মত দিয়েছে। তবে, সংসদের উচ্চ এবং নিম্ন কক্ষের মধ্যে কিছু মতবিরোধ রয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। জামায়াতের দাবি, পিআর পদ্ধতি কার্যকর হলে জাতীয় নির্বাচনে কোনো ধরনের গোলমাল বা অনিয়ম হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না, যা ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে স্পষ্টভাবে দেখা গেছে।

ডা. তাহের আরও বলেন, “ফেয়ার নির্বাচন হবার পরেও ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে যে টালবাহানা হয়েছে, সেটা মেনে নেওয়া যায় না। পিআর পদ্ধতি চালু হলে জাতীয় নির্বাচনে এমন পরিস্থিতি হবে না, এটাই আমাদের বিশ্বাস।” জামায়াত নেতার মতে, ঐকমত্য কমিশনের মেয়াদ বাড়ানোর বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে, তবে তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, এই বিষয়ে দ্রুত আইনি ভিত্তি তৈরি হবে।

নির্বাচনী প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক করার জন্য জামায়াতের পক্ষ থেকে উদার মানসিকতা এবং সকলের মতামতের প্রতিফলন নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে। জামায়াতের নেতারা বলেন, জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে তা দেশের গণতান্ত্রিক পরিবেশকে আরো শক্তিশালী করবে।

এ বৈঠকের মাধ্যমে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং নির্বাচনী সংস্কারের ক্ষেত্রে জামায়াতে ইসলামীর অবস্থান আরও স্পষ্ট হলো, যেখানে তারা সকল রাজনৈতিক দলের মতামতের সমন্বয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক এবং সুষ্ঠু নির্বাচনের আশা প্রকাশ করেছে।