০৮:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উচ্চকক্ষ নয়, সংসদকে শক্তিশালী করতে বাস্তবধর্মী সংস্কার প্রয়োজন: সিপিডি

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৩:২৪:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫
  • ১২ Time View

সবুজদিন রিপোর্ট।।
বাংলাদেশে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের প্রস্তাব রাজনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে মনে করছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থার গবেষকরা বরং মনে করেন, বিদ্যমান এককক্ষবিশিষ্ট সংসদ ব্যবস্থাকেই আইনি, প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত সংস্কারের মাধ্যমে শক্তিশালী করা উচিত।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত জাতীয় সংলাপে সিপিডির গবেষকরা এ আহ্বান জানান। ‘প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষ কি জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পারবে?’ শীর্ষক সংলাপে বাংলাদেশে সংসদীয় জবাবদিহি এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করতে বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নতুন প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।
সিপিডির গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংবিধান ও নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত কিছু সংস্কার যেমন বাইক্যামেরালিজম, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব, দলনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি বা নিয়োগ কমিটি গঠন নীতিগতভাবে আকর্ষণীয় হলেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এগুলো কার্যকর হবে না। দীর্ঘদিনের দলীয় আনুগত্য, পৃষ্ঠপোষকতা এবং ‘বিজয়ী সব পায়’ রাজনীতির সংস্কৃতিতে এসব প্রস্তাব কার্যত প্রতীকী হয়ে থাকে। এর ফলে জবাবদিহি বা ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার বদলে রাজনৈতিক অচলাবস্থা, প্রভাব বিস্তার এবং ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ আরও বাড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
সিপিডি মনে করে, কাঠামোগত ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ছাড়া শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার কার্যকর জবাবদিহি আনতে পারবে না। তাই উচ্চকক্ষ গঠন না করে বিদ্যমান সংসদকেই কার্যকর করার ওপর জোর দেওয়া উচিত।
সংস্থাটি সংসদীয় ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে কয়েকটি বাস্তবধর্মী পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়েছে। এতে রয়েছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোতে বিরোধী দলীয় এমপিদের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ, রাজনৈতিক দলের তহবিল সংগ্রহ ও ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, স্থানীয় সরকারকে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করা, স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং দলত্যাগ রোধে আইনি সংস্কার।
গবেষকরা আরও বলেন, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ও সাংবিধানিক পদে নিয়োগ ক্ষমতা থাকা উচিত, তবে এসব নিয়োগ সংসদীয় পর্যালোচনা কমিটির মাধ্যমে পুনর্বিবেচনার সুযোগ রাখতে হবে। এছাড়া সংসদের আগে ও পরে আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় পরামর্শ ও মূল্যায়নের জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করা প্রয়োজন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের আদলে এ কমিশনের নাম হতে পারে ‘গণতন্ত্র, আইন প্রণয়ন, নির্বাহী ও আইনবিষয়ক সংসদীয় কমিশন’।
সিপিডি গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, এই কমিশন সংবিধান, আইন ও প্রশাসনিক নীতিমালা শক্তিশালী করা, নাগরিক অধিকার সুরক্ষা এবং স্থানীয় সরকারকে গণতান্ত্রিকভাবে বিকশিত করার কাজ করবে

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে নিরাপদ সড়ক দিবসের আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত

উচ্চকক্ষ নয়, সংসদকে শক্তিশালী করতে বাস্তবধর্মী সংস্কার প্রয়োজন: সিপিডি

Update Time : ০৩:২৪:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর ২০২৫

সবুজদিন রিপোর্ট।।
বাংলাদেশে দ্বিকক্ষবিশিষ্ট সংসদ গঠনের প্রস্তাব রাজনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে মনে করছে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)। সংস্থার গবেষকরা বরং মনে করেন, বিদ্যমান এককক্ষবিশিষ্ট সংসদ ব্যবস্থাকেই আইনি, প্রাতিষ্ঠানিক ও কাঠামোগত সংস্কারের মাধ্যমে শক্তিশালী করা উচিত।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত জাতীয় সংলাপে সিপিডির গবেষকরা এ আহ্বান জানান। ‘প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষ কি জাতীয় সংসদের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পারবে?’ শীর্ষক সংলাপে বাংলাদেশে সংসদীয় জবাবদিহি এবং গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান শক্তিশালী করতে বিভিন্ন দেশের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে নতুন প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়।
সিপিডির গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সংবিধান ও নির্বাচন কমিশনের প্রস্তাবিত কিছু সংস্কার যেমন বাইক্যামেরালিজম, আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব, দলনিরপেক্ষ ব্যক্তিদের অন্তর্ভুক্তি বা নিয়োগ কমিটি গঠন নীতিগতভাবে আকর্ষণীয় হলেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতায় এগুলো কার্যকর হবে না। দীর্ঘদিনের দলীয় আনুগত্য, পৃষ্ঠপোষকতা এবং ‘বিজয়ী সব পায়’ রাজনীতির সংস্কৃতিতে এসব প্রস্তাব কার্যত প্রতীকী হয়ে থাকে। এর ফলে জবাবদিহি বা ভারসাম্য প্রতিষ্ঠার বদলে রাজনৈতিক অচলাবস্থা, প্রভাব বিস্তার এবং ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ আরও বাড়ার ঝুঁকি তৈরি হয়।
সিপিডি মনে করে, কাঠামোগত ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ছাড়া শুধুমাত্র প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার কার্যকর জবাবদিহি আনতে পারবে না। তাই উচ্চকক্ষ গঠন না করে বিদ্যমান সংসদকেই কার্যকর করার ওপর জোর দেওয়া উচিত।
সংস্থাটি সংসদীয় ব্যবস্থা শক্তিশালী করতে কয়েকটি বাস্তবধর্মী পদক্ষেপের পরামর্শ দিয়েছে। এতে রয়েছে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিগুলোতে বিরোধী দলীয় এমপিদের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ, রাজনৈতিক দলের তহবিল সংগ্রহ ও ব্যয়ের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা, স্থানীয় সরকারকে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর করা, স্থানীয় ও জাতীয় নির্বাচনে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়ানো এবং দলত্যাগ রোধে আইনি সংস্কার।
গবেষকরা আরও বলেন, সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ও সাংবিধানিক পদে নিয়োগ ক্ষমতা থাকা উচিত, তবে এসব নিয়োগ সংসদীয় পর্যালোচনা কমিটির মাধ্যমে পুনর্বিবেচনার সুযোগ রাখতে হবে। এছাড়া সংসদের আগে ও পরে আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় পরামর্শ ও মূল্যায়নের জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠন করা প্রয়োজন। ইউরোপীয় ইউনিয়নের আদলে এ কমিশনের নাম হতে পারে ‘গণতন্ত্র, আইন প্রণয়ন, নির্বাহী ও আইনবিষয়ক সংসদীয় কমিশন’।
সিপিডি গবেষণা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, এই কমিশন সংবিধান, আইন ও প্রশাসনিক নীতিমালা শক্তিশালী করা, নাগরিক অধিকার সুরক্ষা এবং স্থানীয় সরকারকে গণতান্ত্রিকভাবে বিকশিত করার কাজ করবে