সবুজদিন রিপোর্ট।।
রাজধানীর উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভবনে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হয়ে ১৯ জন নিহত হয়েছেন এবং অন্তত ১৬৪ জন আহত হয়েছেন। হতাহতদের অধিকাংশই ছিলেন শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষ। নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করে মরদেহ হস্তান্তরের কাজ ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। তবে যাদের তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত করা সম্ভব হচ্ছে না, তাদের জন্য ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে মরদেহ শনাক্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন।
সোমবার (২১ জুলাই) দুপুর ১টা ৬ মিনিটে কুর্মিটোলার বিমানঘাঁটি এ কে খন্দকার থেকে উড্ডয়নের পরপরই যুদ্ধবিমানটি যান্ত্রিক ত্রুটির মুখে পড়ে। কিছু সময়ের মধ্যেই সেটি উত্তরার মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি দোতলা ভবনে বিধ্বস্ত হয়। এতে ঘটনাস্থলে এবং পরবর্তী সময়ে হাসপাতালে মারা যান মোট ১৯ জন। পাইলটও নিহতদের মধ্যে রয়েছেন। আহতদের অনেকের অবস্থা গুরুতর।
দুর্ঘটনার পরপরই ফায়ার সার্ভিস, পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং উদ্ধার অভিযান চালান। হতাহতদের দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালগুলোতে পাঠানো হয়।
আইএসপিআর-এর দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে আহত হয়েছেন ৮ জন, তবে কেউ মারা যাননি। বার্ন ইনস্টিটিউটে ভর্তি ৭০ জনের মধ্যে ২ জন মারা গেছেন। সিএমএইচে ভর্তি হয়েছেন ১৪ জন, মারা গেছেন ১২ জন। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালেও ২ জন নিহত হয়েছেন, তবে কেউ আহত হননি। উত্তরার বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে আহত ও নিহতদের চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন এবং আহতদের চিকিৎসার বিষয়ে সার্বক্ষণিক খোঁজখবর রাখছেন বলে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে জানানো হয়। একই সঙ্গে হাসপাতাল এলাকায় অহেতুক ভিড় এড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে যাতে চিকিৎসাসেবা বিঘ্নিত না হয়।
যাদের মরদেহ শনাক্ত করা যাচ্ছে, তাদের মৃতদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। যাদের তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্ত সম্ভব নয়, তাদের ক্ষেত্রে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে পরিচয় নিশ্চিত করার পর মরদেহ হস্তান্তরের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
এই দুর্ঘটনায় যারা প্রাণ হারিয়েছেন, তাদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছে রাষ্ট্র ও সরকার। দুঃখজনক এই ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের ঘোষণা এসেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে।