০৮:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সমঝোতা জরুরি: প্রধান উপদেষ্টা

সবুজদিন রিপোর্ট।।
জাতির সামনে নবযাত্রার সুযোগ হিসেবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বলেন, জুলাই সনদ থেকে বের হওয়ার কোনো উপায় নেই। যে সমঝোতার রাস্তায় হাঁটা শুরু হয়েছে, তা থেকে পশ্চাতে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। দেশের স্থিতিশীলতা ও শান্তি নিশ্চিত করতে সকল রাজনৈতিক দলকে সমঝোতার পথ বেছে নিতে হবে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে বলেন, প্রাথমিকভাবে তিনি নিশ্চিত ছিলেন না, এই প্রক্রিয়া থেকে ফল কী হবে। তবে দীর্ঘ পথ অতিক্রমের পর দেখেছেন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার মাধ্যমে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাজ বিশ্বব্যাপী নজির হয়ে থাকবে, কিন্তু এটি যেন খুঁতওয়ালা নজির না হয়। তিনি রাস্তাটুকু সুন্দরভাবে শেষ করার মাধ্যমে দেশের জন্য উদাহরণ স্থাপন করতে রাজনৈতিক নেতাদের আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে বলেন, নির্বাচনের পথকে উৎসবের রূপ দিতে হলে সমঝোতা অপরিহার্য। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং এটি দেশের ‘মহোৎসবের নির্বাচন’ হিসেবে গণ্য হবে। তিনি বলেন, “ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থান আমাদের হাতে আলাদিনের চেরাগের দৈত্য এনে দিয়েছে। আমাদের কাছে বড় স্বপ্ন পূরণের সুযোগ এসেছে। ছোটখাট বিষয় নিয়ে আটকে গেলে মূল লক্ষ্য হারিয়ে যাবে। আমরা দেশের জন্য নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।”

ড. ইউনূস আরও বলেন, সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে স্বৈরাচারের সব পথ বন্ধ করতে হবে, যাতে আর কোনোভাবেই তা ফিরে আসতে না পারে। সকল রাজনৈতিক দলকে একমত হয়ে সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি জোর দেন, দ্বিমতের কোনো সুযোগ নেই। সমঝোতার পথ বেছে নিলে নির্বাচন সফল হবে এবং দেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হবে।

তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক নেতাদের উদ্যোগ ও বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় দেশের জন্য নতুন জাতি গঠনের সূতিকাগার তৈরি করা সম্ভব। ভোটের মাধ্যমে নবজন্ম নিশ্চিত করতে হলে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করতে হবে এবং সকল পথঘাটে স্বৈরাচারের প্রবেশ রোধ করতে হবে। নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সম্পন্ন করা হলে দেশের জনগণ নিশ্চিন্ত হবে এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশ বাংলাদেশ থেকে শিখবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ ও এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বক্তব্য দেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

মানিকগঞ্জ জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে নিরাপদ সড়ক দিবসের আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত

জুলাই সনদ বাস্তবায়নে সমঝোতা জরুরি: প্রধান উপদেষ্টা

Update Time : ০২:৩৯:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সবুজদিন রিপোর্ট।।
জাতির সামনে নবযাত্রার সুযোগ হিসেবে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে উল্লেখ করে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোববার (১৪ সেপ্টেম্বর) ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে বলেন, জুলাই সনদ থেকে বের হওয়ার কোনো উপায় নেই। যে সমঝোতার রাস্তায় হাঁটা শুরু হয়েছে, তা থেকে পশ্চাতে ফিরে যাওয়া সম্ভব নয়। দেশের স্থিতিশীলতা ও শান্তি নিশ্চিত করতে সকল রাজনৈতিক দলকে সমঝোতার পথ বেছে নিতে হবে।

ড. মুহাম্মদ ইউনূস বৈঠকে বলেন, প্রাথমিকভাবে তিনি নিশ্চিত ছিলেন না, এই প্রক্রিয়া থেকে ফল কী হবে। তবে দীর্ঘ পথ অতিক্রমের পর দেখেছেন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার মাধ্যমে ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কাজ বিশ্বব্যাপী নজির হয়ে থাকবে, কিন্তু এটি যেন খুঁতওয়ালা নজির না হয়। তিনি রাস্তাটুকু সুন্দরভাবে শেষ করার মাধ্যমে দেশের জন্য উদাহরণ স্থাপন করতে রাজনৈতিক নেতাদের আহ্বান জানান।

প্রধান উপদেষ্টা বৈঠকে বলেন, নির্বাচনের পথকে উৎসবের রূপ দিতে হলে সমঝোতা অপরিহার্য। ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে এবং এটি দেশের ‘মহোৎসবের নির্বাচন’ হিসেবে গণ্য হবে। তিনি বলেন, “ছাত্র-জনতা গণঅভ্যুত্থান আমাদের হাতে আলাদিনের চেরাগের দৈত্য এনে দিয়েছে। আমাদের কাছে বড় স্বপ্ন পূরণের সুযোগ এসেছে। ছোটখাট বিষয় নিয়ে আটকে গেলে মূল লক্ষ্য হারিয়ে যাবে। আমরা দেশের জন্য নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই।”

ড. ইউনূস আরও বলেন, সংবিধান সংস্কারের মাধ্যমে স্বৈরাচারের সব পথ বন্ধ করতে হবে, যাতে আর কোনোভাবেই তা ফিরে আসতে না পারে। সকল রাজনৈতিক দলকে একমত হয়ে সনদ বাস্তবায়ন করতে হবে। তিনি জোর দেন, দ্বিমতের কোনো সুযোগ নেই। সমঝোতার পথ বেছে নিলে নির্বাচন সফল হবে এবং দেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত হবে।

তিনি বলেন, এই প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক নেতাদের উদ্যোগ ও বিশেষজ্ঞদের সহায়তায় দেশের জন্য নতুন জাতি গঠনের সূতিকাগার তৈরি করা সম্ভব। ভোটের মাধ্যমে নবজন্ম নিশ্চিত করতে হলে উৎসবমুখর পরিবেশ তৈরি করতে হবে এবং সকল পথঘাটে স্বৈরাচারের প্রবেশ রোধ করতে হবে। নির্বাচন ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে সম্পন্ন করা হলে দেশের জনগণ নিশ্চিন্ত হবে এবং বিশ্বের অন্যান্য দেশ বাংলাদেশ থেকে শিখবে।

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের সভাপতিত্বে এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দারের সঞ্চালনায় বৈঠকে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ ও এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বক্তব্য দেন।