০১:৪২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাইকগাছায় লতা আমের খোসার রং বাদামি সফেদার মতন ; বাজারে চাহিদা নেই

প্রকাশ ঘোষ বিধান, পাইকগাছা ঃ
পাইকগাছায় স্ক্যাব রোগে আক্রান্ত বোম্বাই লতা আমের রং বাদামি ধুসর বর্ণের হয়ে গেছে। লতা আম গাছের প্রায় সব আমের খোসা বাদামি ধুসর বর্ণের সফেদার মতন দেখতে হয়েছে। দেখলে মনে হয় আম গাছে সফেদা ধরেছে। আমের রং ধুসর হওয়ায় বাজারে চাহিদা কম। ধুসর বর্ণের লতা আমের চাহিদা না থাকায় বিক্রি হচ্ছে কম দামে। এতে আম চাষিরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছ।
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুরের বোম্বাই লতা আম অর্থকরী ফসল হিসেবে বেশ জনপ্রিয় ছিলো। তবে এবছর লতা আমের সবুজ ছাল বা খোসা ধুসর বর্ণের হওয়ায আমের ক্রেতা নেই। দাদযুক্ত লতা আমের চাহিদা নেই বাজারে তাই কম দামে বিক্রি হচ্ছে। লতা আমের বাগান মালিক ও ব্যবসাহীরা আম নিয়ে বিপাকে পড়েছে। গাছ থেকে আম পাড়ার খরচ উঠছে না। এর ফলে গাছে আম নষ্ট হচ্ছে। লতা আমের বাগান মালিক গদাইপুরের মোবারক ঢালী বলেন, গাছে সার ঔষধ প্রয়োগ করার পরও লতা আমে ধুসর রঙের হয়েছে। দাগযুক্ত লতা আম কিনছে না। খুব কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আম বিক্রি না হওয়ায় অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে।
কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, আম বাদামি ধুসর বর্ণের হওয়া এটা আমের দাদ রোগ বা স্ক্যাব রোগ। আমের স্ক্যাব রোগ হলে কচি আমের গুটি আক্রান্ত হয় ঝড়ে যায়। আক্রান্ত আমের খোসা বাদামি ধুসর বর্ণের হয়ে যায়, খোসা খসখসে ও কিছুটা ফাটাফাটা মনে হয় ছোট অবস্থায় আক্রান্ত হলে আম ঝরে পড়ে, বড় আমে আক্রমণ থাকলে পুরা আম ধুসর বর্ণে ঢেকে যায়। আমের রং ধুসর হওয়ায় বাজার দর কমে যায়।
আম বাংলাদেশের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় এবং উপাদেয় ফল। তাই আমকে ফলের রাজা বলা হয়। বাংলাদেশের প্রায় সব জেলাতেই আম জন্মে। তবে উৎকৃষ্টমানের আম প্রধানত উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে যেমন-চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, রংপুর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা,খুলনা, সাতক্ষীরা ও যশোর জেলাতে ভালো জন্মে। তবে খুলনার গদাইপুর এলাকার বোম্বাই লতা আমের ব্যাপক পরিচিতি ছিলো। লতা আম এ অঞ্চলে একটি অর্থকরী ফসল হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। তবে লতা আমের মান নষ্ট হওয়ায় এর চাহিদা ও বিক্রি হচ্ছে না।
পাইকগাছা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ একরামুল হোসেন বলেন, বোম্বাই লতার বাদামি ধুসর বর্ণের হওয়া এটা আমের দাদ রোগ বা স্ক্যাব রোগ। আম গুটি অবস্থায় থাকতে কার্বেন্ডাজিম বা ম্যানকোজেব ২ গ্রাম / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে ১৫ দিন পরপর ৩-৪ বার স্প্রে করলে আমের ধুসর রং থাকবে না আর ফলও ভালো পাওয়া যায়। ফল সংগ্রহ শেষ হলে গাছের মরা ডালপালা, ফলের বোটা, রোগ বা পোকা আক্রান্ত ডাল পালা ও অতিঘন ডালপালা ছাটাই করে পরিস্কার করে রাখতে হবে। পরিস্কার করার পর একঠি ছত্রাক নাশক ও একটি কীটনাশক দ্বারা পুরো গাছ ভালভাবে স্প্রে করতে হবে। তাহলে গাছ থেকে স্ক্যাব রোগমুক্ত আমের ভালো ফলন পাওয়া যাবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আন্দোলনকারীদের সংযত থাকার আহ্বান নেপালের সেনাপ্রধানের

পাইকগাছায় লতা আমের খোসার রং বাদামি সফেদার মতন ; বাজারে চাহিদা নেই

Update Time : ০৪:১২:২৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫

প্রকাশ ঘোষ বিধান, পাইকগাছা ঃ
পাইকগাছায় স্ক্যাব রোগে আক্রান্ত বোম্বাই লতা আমের রং বাদামি ধুসর বর্ণের হয়ে গেছে। লতা আম গাছের প্রায় সব আমের খোসা বাদামি ধুসর বর্ণের সফেদার মতন দেখতে হয়েছে। দেখলে মনে হয় আম গাছে সফেদা ধরেছে। আমের রং ধুসর হওয়ায় বাজারে চাহিদা কম। ধুসর বর্ণের লতা আমের চাহিদা না থাকায় বিক্রি হচ্ছে কম দামে। এতে আম চাষিরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছ।
খুলনার পাইকগাছা উপজেলার গদাইপুরের বোম্বাই লতা আম অর্থকরী ফসল হিসেবে বেশ জনপ্রিয় ছিলো। তবে এবছর লতা আমের সবুজ ছাল বা খোসা ধুসর বর্ণের হওয়ায আমের ক্রেতা নেই। দাদযুক্ত লতা আমের চাহিদা নেই বাজারে তাই কম দামে বিক্রি হচ্ছে। লতা আমের বাগান মালিক ও ব্যবসাহীরা আম নিয়ে বিপাকে পড়েছে। গাছ থেকে আম পাড়ার খরচ উঠছে না। এর ফলে গাছে আম নষ্ট হচ্ছে। লতা আমের বাগান মালিক গদাইপুরের মোবারক ঢালী বলেন, গাছে সার ঔষধ প্রয়োগ করার পরও লতা আমে ধুসর রঙের হয়েছে। দাগযুক্ত লতা আম কিনছে না। খুব কম দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। আম বিক্রি না হওয়ায় অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে।
কৃষি অফিস সুত্রে জানা গেছে, আম বাদামি ধুসর বর্ণের হওয়া এটা আমের দাদ রোগ বা স্ক্যাব রোগ। আমের স্ক্যাব রোগ হলে কচি আমের গুটি আক্রান্ত হয় ঝড়ে যায়। আক্রান্ত আমের খোসা বাদামি ধুসর বর্ণের হয়ে যায়, খোসা খসখসে ও কিছুটা ফাটাফাটা মনে হয় ছোট অবস্থায় আক্রান্ত হলে আম ঝরে পড়ে, বড় আমে আক্রমণ থাকলে পুরা আম ধুসর বর্ণে ঢেকে যায়। আমের রং ধুসর হওয়ায় বাজার দর কমে যায়।
আম বাংলাদেশের সর্বাপেক্ষা জনপ্রিয় এবং উপাদেয় ফল। তাই আমকে ফলের রাজা বলা হয়। বাংলাদেশের প্রায় সব জেলাতেই আম জন্মে। তবে উৎকৃষ্টমানের আম প্রধানত উত্তর পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে যেমন-চাঁপাইনবাবগঞ্জ, রাজশাহী, নাটোর, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, রংপুর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, চুয়াডাঙ্গা,খুলনা, সাতক্ষীরা ও যশোর জেলাতে ভালো জন্মে। তবে খুলনার গদাইপুর এলাকার বোম্বাই লতা আমের ব্যাপক পরিচিতি ছিলো। লতা আম এ অঞ্চলে একটি অর্থকরী ফসল হিসেবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল। তবে লতা আমের মান নষ্ট হওয়ায় এর চাহিদা ও বিক্রি হচ্ছে না।
পাইকগাছা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মোঃ একরামুল হোসেন বলেন, বোম্বাই লতার বাদামি ধুসর বর্ণের হওয়া এটা আমের দাদ রোগ বা স্ক্যাব রোগ। আম গুটি অবস্থায় থাকতে কার্বেন্ডাজিম বা ম্যানকোজেব ২ গ্রাম / লি. হারে পানিতে মিশিয়ে ১৫ দিন পরপর ৩-৪ বার স্প্রে করলে আমের ধুসর রং থাকবে না আর ফলও ভালো পাওয়া যায়। ফল সংগ্রহ শেষ হলে গাছের মরা ডালপালা, ফলের বোটা, রোগ বা পোকা আক্রান্ত ডাল পালা ও অতিঘন ডালপালা ছাটাই করে পরিস্কার করে রাখতে হবে। পরিস্কার করার পর একঠি ছত্রাক নাশক ও একটি কীটনাশক দ্বারা পুরো গাছ ভালভাবে স্প্রে করতে হবে। তাহলে গাছ থেকে স্ক্যাব রোগমুক্ত আমের ভালো ফলন পাওয়া যাবে।