০১:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলােদেশ ঋণে জর্জরিত -চীন

সবুজদিন ডেস্ক।।
চীনের কাছে বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। বাংলাদেশ এমনিতেই রাজনৈতিক অস্থিরতায় নিমজ্জিত আছে। একই সঙ্গে মার্কিন বাজারে মন্দার জেরে দেখা দিয়েছে অর্থনৈতিক অস্থিরতা। উচ্চ বেকারত্ব এবং ঋণের চাপের মধ্যেই দেশে শুরু হয় চাকরিতে কোটা সিস্টেমের বিরুদ্ধে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ। সেই বিক্ষোভ কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ব্যাপক আকার ধারণ করে। যার জেরে সোমবার (৭ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন । খবর সাউথ চায়না সাউথ মর্নিং পোস্টের।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, বাংলাদেশে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে, যা নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করতে পারে। ইতোমধ্যেই দেশের সংসদ ভেঙে দেয়া হয়েছে। এই আবহে এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বেইজিং বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘একটি বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী এবং কৌশলগত অংশীদার হিসাবে, চীন আন্তরিকভাবে আশা করে যে বাংলাদেশ অল্প সময়ের মধ্যে সামাজিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করবে। বিশৃঙ্খলতার মধ্যে হাসিনার পদত্যাগ ঠিক এমন এক সময়ে হয়েছে যখন বৈশ্বিকভাবেও অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। বিশেষ করে মার্কিন বাজারে মন্দা এই উদ্বেগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এই আর্থিক অস্থিরতা বিভিন্ন স্বল্প-আয়ের দেশের ঋণ পরিশোধ ক্ষমতার উপর চাপ সৃষ্টি করবে। পাশাপাশি প্রধান ঋণদাতা হিসেবে চীনও চ্যালেঞ্জের মুখে পরবে।
ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাপান ও রাশিয়ার পর চীন বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা এবং ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ বাংলাদেশকে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি ঋণ দিয়েছে বেইজিং।
জুলাই মাসে হাসিনার চীন সফরের আগে তিনি অতিরিক্ত আরো ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ চেয়েছিলেন। এরমধ্যে জুনে ছাত্র বিক্ষোভ শুরু হয়ে চীন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে খবর , অর্থনৈতিক সহায়তার জন্য ১ বিলিয়ন ইউয়ান (১৪০ মিলিয়ন ডলার ) দেয়ার প্রতিশুতি দেয় বেইজিং ।
সাংহাইয়ের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের ডেপুটি ডিরেক্টর লিন মিনওয়াং বলেন, হাসিনার পদত্যাগ বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। বেইজিংয়ের প্রতি দেশটির পরবর্তী প্রশাসনের নীতি কী হবে তাও স্পষ্ট নয় ।
চীন কয়েক বছর ধরে শেখ হাসিনা সরকারকে সমর্থন করে আসছে। অন্যদিকে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা বিরোধী দল বিএনপিকে কঠোরভাবে দমন করে আসছে। যদি ধরে নেয়া হয় বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসে তাহলে শেখ হাসিনার প্রতি চীনের অতীত সমর্থন পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলতে পারে বলে মনে করেন লিন।
লিন মিনওয়াং বলেন, বিএনপি ঐতিহ্যগতভাবে ভারতের চেয়ে পাকিস্তান ও চীনের প্রতি বেশি বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল। চীন বছরের পর বছর ধরে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সফরে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ নিয়ে আলোচনা করেন। হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর মঙ্গলবার গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তি পান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
বিশ্বব্যাংক সোমবার বলেছে যে, তারা বাংলাদেশের সাথে ঋণ কর্মসূচিতে দেশের বর্তমান ঘটনাগুলির প্রভাব মূল্যায়ন করছে। দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বব্যাংকের কাছে ১৯.৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাওনাসহ বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ গত বছর প্রথমবারের মতো ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। দেশটি প্রতি বছর চীনের কাছে ২৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সুদ পরিশোধ করছে।
এডিবির সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ তথা সিঙ্গাপুরের আইএসইএএস-ইউসুফ ইশাক ইনস্টিটিউটের একজন সিনিয়র ফেলো জয়ন্ত মেনন বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা কীভাবে চীনের ঋণ পরিশোধের ক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলবে তা বলার সময় এখনো আসেনি। এই মুহূর্তে এটির কোনো বাস্তব প্রভাব নেই বলে মনে করা হচ্ছে।
মেনন বলেন, এগুলো হল সর্বজনীন বাধ্যবাধকতা যা যে কোনো নতুন সরকারকেই পালন করতে হবে, যদি তারা বিশ্বব্যাপী আর্থিক বাজারে বিশ্বাসযোগ্যতা ধরে রাখতে চায়। ‘
একই সময়ে, চীন তার অর্থনীতিতে উচ্চ চাপের মধ্যে রয়েছে, সম্পত্তিজনিত সংকটের কারণে দেশের অর্থনীতি গতি হারিয়েছে। চীন উন্নয়নশীল দেশগুলির অন্যতম প্রধান তহবিল প্রদানকারী। এইড ডাটার তথ্যানুযায়ী চীন ২০০০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ১৬৫টি নিম্ন-আয়ের এবং মধ্যম আয়ের দেশে প্রায় ২০,০০০টি প্রকল্পের জন্য ১.৩৪ ট্রিলিয়ন ডলার অনুদান এবং ঋণ দিয়েছে।
অন্যদিকে ইউএস ফেডারেল রিজার্ভের হার বৃদ্ধির ফলে বিশ্ব আর্থিক বাজারে সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় কিছু দেশ চীনের দিকেও ঝুঁকছে। কম আয়ের দেশগুলির জন্য মার্কিন ডলার-নির্ধারিত ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বাড়িয়েছে। কিন্তু চীনকে ঋণ প্রদানে ক্রমবর্ধমানভাবে সতর্ক হতে দেখা গেছে। তার বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অধীনে অবকাঠামোতে বড় ব্যয় থেকে উচ্চ মানের প্রকল্পে স্থানান্তরিত হয়েছে । গত মাসের তৃতীয় প্লেনামে (একটি সমাবেশ যা দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ করে) কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি পরিকল্পনার প্রধান দিকনির্দেশনা হিসাবে সবুজ এবং ডিজিটাল প্রকল্পগুলিকে তুলে ধরা হয়েছে ।
দুই বছরে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় দেশ যেটি এমন রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে । ২০২২ সালে তৎকালীন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে দেশে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার মধ্যে পদত্যাগ করেন। পরের মাসগুলিতে, কলম্বো তার ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দ্বিপাক্ষিক ঋণ পুনর্গঠন করার জন্য চীনসহ প্রধান ঋণদাতা দেশগুলির সাথে একটি চুক্তি করতে চেয়েছিল।
সিচুয়ান ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক অধ্যাপক পাং ঝংইং বলেন, তবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভিন্ন। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এখনো ততটা খারাপ নয়, যদিও তাদের নিজস্ব অনেক সমস্যা রয়েছে। এসব সমসন্যার জন্য অবশ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়ী করা হচ্ছে ।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আন্দোলনকারীদের সংযত থাকার আহ্বান নেপালের সেনাপ্রধানের

বাংলােদেশ ঋণে জর্জরিত -চীন

Update Time : ১০:৩২:২০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ অগাস্ট ২০২৪

সবুজদিন ডেস্ক।।
চীনের কাছে বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা নিয়ে দেখা দিয়েছে অনিশ্চয়তা। বাংলাদেশ এমনিতেই রাজনৈতিক অস্থিরতায় নিমজ্জিত আছে। একই সঙ্গে মার্কিন বাজারে মন্দার জেরে দেখা দিয়েছে অর্থনৈতিক অস্থিরতা। উচ্চ বেকারত্ব এবং ঋণের চাপের মধ্যেই দেশে শুরু হয় চাকরিতে কোটা সিস্টেমের বিরুদ্ধে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ। সেই বিক্ষোভ কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই ব্যাপক আকার ধারণ করে। যার জেরে সোমবার (৭ আগস্ট) শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেন । খবর সাউথ চায়না সাউথ মর্নিং পোস্টের।
প্রতিবেদনটিতে বলা হয়, বাংলাদেশে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হবে, যা নির্বাচনের পথ প্রশস্ত করতে পারে। ইতোমধ্যেই দেশের সংসদ ভেঙে দেয়া হয়েছে। এই আবহে এক সংক্ষিপ্ত বিবৃতিতে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বেইজিং বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে।
এতে বলা হয়েছে, ‘একটি বন্ধুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী এবং কৌশলগত অংশীদার হিসাবে, চীন আন্তরিকভাবে আশা করে যে বাংলাদেশ অল্প সময়ের মধ্যে সামাজিক স্থিতিশীলতা পুনরুদ্ধার করবে। বিশৃঙ্খলতার মধ্যে হাসিনার পদত্যাগ ঠিক এমন এক সময়ে হয়েছে যখন বৈশ্বিকভাবেও অর্থনৈতিক মন্দা চলছে। বিশেষ করে মার্কিন বাজারে মন্দা এই উদ্বেগ আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। এই আর্থিক অস্থিরতা বিভিন্ন স্বল্প-আয়ের দেশের ঋণ পরিশোধ ক্ষমতার উপর চাপ সৃষ্টি করবে। পাশাপাশি প্রধান ঋণদাতা হিসেবে চীনও চ্যালেঞ্জের মুখে পরবে।
ডেইলি স্টারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জাপান ও রাশিয়ার পর চীন বাংলাদেশের তৃতীয় বৃহত্তম ঋণদাতা এবং ২০২৩ সালের শেষ নাগাদ বাংলাদেশকে ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি ঋণ দিয়েছে বেইজিং।
জুলাই মাসে হাসিনার চীন সফরের আগে তিনি অতিরিক্ত আরো ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ চেয়েছিলেন। এরমধ্যে জুনে ছাত্র বিক্ষোভ শুরু হয়ে চীন কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি। তবে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্রে খবর , অর্থনৈতিক সহায়তার জন্য ১ বিলিয়ন ইউয়ান (১৪০ মিলিয়ন ডলার ) দেয়ার প্রতিশুতি দেয় বেইজিং ।
সাংহাইয়ের ফুদান বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের ডেপুটি ডিরেক্টর লিন মিনওয়াং বলেন, হাসিনার পদত্যাগ বাংলাদেশের ঋণ পরিশোধের ক্ষমতা নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে। বেইজিংয়ের প্রতি দেশটির পরবর্তী প্রশাসনের নীতি কী হবে তাও স্পষ্ট নয় ।
চীন কয়েক বছর ধরে শেখ হাসিনা সরকারকে সমর্থন করে আসছে। অন্যদিকে বাংলাদেশে শেখ হাসিনা বিরোধী দল বিএনপিকে কঠোরভাবে দমন করে আসছে। যদি ধরে নেয়া হয় বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসে তাহলে শেখ হাসিনার প্রতি চীনের অতীত সমর্থন পরিস্থিতিকে আরো জটিল করে তুলতে পারে বলে মনে করেন লিন।
লিন মিনওয়াং বলেন, বিএনপি ঐতিহ্যগতভাবে ভারতের চেয়ে পাকিস্তান ও চীনের প্রতি বেশি বন্ধুত্বপূর্ণ ছিল। চীন বছরের পর বছর ধরে বিএনপির সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। ২০১৬ সালে বাংলাদেশ সফরে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার সঙ্গে বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ নিয়ে আলোচনা করেন। হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর মঙ্গলবার গৃহবন্দিত্ব থেকে মুক্তি পান সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া।
বিশ্বব্যাংক সোমবার বলেছে যে, তারা বাংলাদেশের সাথে ঋণ কর্মসূচিতে দেশের বর্তমান ঘটনাগুলির প্রভাব মূল্যায়ন করছে। দ্য ডেইলি স্টারের প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বব্যাংকের কাছে ১৯.৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার পাওনাসহ বাংলাদেশের বৈদেশিক ঋণ গত বছর প্রথমবারের মতো ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। দেশটি প্রতি বছর চীনের কাছে ২৫১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সুদ পরিশোধ করছে।
এডিবির সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ তথা সিঙ্গাপুরের আইএসইএএস-ইউসুফ ইশাক ইনস্টিটিউটের একজন সিনিয়র ফেলো জয়ন্ত মেনন বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা কীভাবে চীনের ঋণ পরিশোধের ক্ষমতার ওপর প্রভাব ফেলবে তা বলার সময় এখনো আসেনি। এই মুহূর্তে এটির কোনো বাস্তব প্রভাব নেই বলে মনে করা হচ্ছে।
মেনন বলেন, এগুলো হল সর্বজনীন বাধ্যবাধকতা যা যে কোনো নতুন সরকারকেই পালন করতে হবে, যদি তারা বিশ্বব্যাপী আর্থিক বাজারে বিশ্বাসযোগ্যতা ধরে রাখতে চায়। ‘
একই সময়ে, চীন তার অর্থনীতিতে উচ্চ চাপের মধ্যে রয়েছে, সম্পত্তিজনিত সংকটের কারণে দেশের অর্থনীতি গতি হারিয়েছে। চীন উন্নয়নশীল দেশগুলির অন্যতম প্রধান তহবিল প্রদানকারী। এইড ডাটার তথ্যানুযায়ী চীন ২০০০ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ১৬৫টি নিম্ন-আয়ের এবং মধ্যম আয়ের দেশে প্রায় ২০,০০০টি প্রকল্পের জন্য ১.৩৪ ট্রিলিয়ন ডলার অনুদান এবং ঋণ দিয়েছে।
অন্যদিকে ইউএস ফেডারেল রিজার্ভের হার বৃদ্ধির ফলে বিশ্ব আর্থিক বাজারে সুদের হার বেড়ে যাওয়ায় কিছু দেশ চীনের দিকেও ঝুঁকছে। কম আয়ের দেশগুলির জন্য মার্কিন ডলার-নির্ধারিত ঋণ পরিশোধের পরিমাণ বাড়িয়েছে। কিন্তু চীনকে ঋণ প্রদানে ক্রমবর্ধমানভাবে সতর্ক হতে দেখা গেছে। তার বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের অধীনে অবকাঠামোতে বড় ব্যয় থেকে উচ্চ মানের প্রকল্পে স্থানান্তরিত হয়েছে । গত মাসের তৃতীয় প্লেনামে (একটি সমাবেশ যা দেশের ভবিষ্যৎ অর্থনৈতিক নীতি নির্ধারণ করে) কমিউনিস্ট পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি পরিকল্পনার প্রধান দিকনির্দেশনা হিসাবে সবুজ এবং ডিজিটাল প্রকল্পগুলিকে তুলে ধরা হয়েছে ।
দুই বছরে বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় দেশ যেটি এমন রাজনৈতিক সংকটের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে । ২০২২ সালে তৎকালীন শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে দেশে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিশৃঙ্খলার মধ্যে পদত্যাগ করেন। পরের মাসগুলিতে, কলম্বো তার ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দ্বিপাক্ষিক ঋণ পুনর্গঠন করার জন্য চীনসহ প্রধান ঋণদাতা দেশগুলির সাথে একটি চুক্তি করতে চেয়েছিল।
সিচুয়ান ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ক অধ্যাপক পাং ঝংইং বলেন, তবে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ভিন্ন। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এখনো ততটা খারাপ নয়, যদিও তাদের নিজস্ব অনেক সমস্যা রয়েছে। এসব সমসন্যার জন্য অবশ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দায়ী করা হচ্ছে ।