০৬:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মোংলা ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে নাগরিক জীবন অতিষ্ঠ: কর্তব্য অবহেলার অভিযোগ

রেক্সোনা আক্তার,বিশেষ প্রতিনিধি।।
পূর্ব কোন ঘোষণা ছাড়াই দিন ও রাতের বিভিন্ন সময়ে বিদ্যুৎ থাকছে না মোংলায়। দেশের দ্বিতীয় সামুদ্রিক বন্দর মোংলায় ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে নাগরিক জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ এই আছে তো এই নেই, যেন ভেলকিবাজি অবস্থা। সামান্য বাতাস বা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতেও ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে। স্থানীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীদের উদাসীনতা আর কর্তব্য অবহেলার ফলে সরবরাহ লাইনে ক্রুটি থাকায় দিনের পর দিন এ অবস্থা চলে আসছে বলে সাধারণ গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন। পরিস্থিতির উন্নতিতে বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্টদের নামে মাত্র রুটিন ওয়ার্ক ছাড়া বাস্তবে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সর্বশেষ গত শনিবার থেকে গতকাল সোমবার বিকেল পর্যন্ত শহর ও শহরতলীতে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিঊশন কোম্পানী লি. (ওজোপাডিকো) এর অধীন মোংলা বিদ্যুৎ সরবরাহ অফিস পরিচালিত হয়ে আসছে। গ্রামাঞ্চলে পল্লী বিদ্যুতের লাইন হলেও পৌর শহর এলাকায় এদের সরবরাহ লাইন থেকে গ্রাহকরা বিদ্যুৎ ব্যবহার করে থাকেন। মোংলা বিদ্যুৎ সরবরাহের অধীন প্রায় ৫ সহস্রাধিক গ্রাহক রয়েছে। এখান থেকে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ১২ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিভাগ আয় করে থাকে।
এদিকে মোংলা বিদ্যুৎ সরবরাহের বিদ্যুতের লাইন রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্বে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে গ্রাহক সেবায় উদাসীনতা, কর্তব্য অবহেলা ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। এদের গাফিলতিতে গত কয়েক মাস ধরে মোংলা শহরে দিনে রাতে দফায় দফায় লাগাতার বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটছে। সকাল, দুপুর, বিকেল, সন্ধ্যা, গভীর রাত, ভোর রাত এমন কোন সময় নেই যে বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলা চলে। সামান্য বাতাস বা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হলেই বিদ্যুৎ চলে গিয়ে দীর্ঘ সময় সরবরাহ বন্ধ থাকছে। মাঝে মধ্যে লাইন মেরামত বা সংস্কারের নামে সারা দিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে রাখলেও পরে একই সমস্যা পুনরায় দেখা যায়।
কেন বিদ্যুৎ চলে গেলো তা জানতে চাইলে বিদ্যুৎ কর্মীরা জানায়, কোথায় ফল্ট হয়েছে তা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না অথবা লাইন টিকছে না, তাই কখন সরবরাহ চালু হবে তা বলতে পারছি না। অভিযোগ উঠেছে, লাইনে ক্রুটি দেখা দিলে আবাসিক প্রকৌশলী, উপ সহকারী প্রকৌশলী ও লাইনম্যানরা মাঠ পর্যায়ে তদারকিতে আসেন না। দুজন ক্যাজুয়াল ষ্টাফ দিয়ে মাঠ পর্যায়ে তার দায়সারা ক্রটি চিহ্নিত ও তা মেরামতের কাজ করান।
এদিকে বিদ্যুতের অভাবে এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। শিল্প কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়াসহ ব্যবসা বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে।
এ ব্যাপারে মোংলা বিদ্যুৎ সরবরাহের আবাসিক প্রকৌশলী মনোয়ার জাহিদ বলেন, গ্রীড ও আবহাওয়াজনিত কারণে মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত লোকবলের অভাবে লাইনে ক্রুটি মেরামতে বেগ পেতে হয়।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আন্দোলনকারীদের সংযত থাকার আহ্বান নেপালের সেনাপ্রধানের

মোংলা ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে নাগরিক জীবন অতিষ্ঠ: কর্তব্য অবহেলার অভিযোগ

Update Time : ০২:২০:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ অগাস্ট ২০২৪

রেক্সোনা আক্তার,বিশেষ প্রতিনিধি।।
পূর্ব কোন ঘোষণা ছাড়াই দিন ও রাতের বিভিন্ন সময়ে বিদ্যুৎ থাকছে না মোংলায়। দেশের দ্বিতীয় সামুদ্রিক বন্দর মোংলায় ঘন ঘন বিদ্যুৎ বিভ্রাটে নাগরিক জীবন অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। বিদ্যুৎ এই আছে তো এই নেই, যেন ভেলকিবাজি অবস্থা। সামান্য বাতাস বা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতেও ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে। স্থানীয় বিদ্যুৎ সরবরাহ অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কর্মচারীদের উদাসীনতা আর কর্তব্য অবহেলার ফলে সরবরাহ লাইনে ক্রুটি থাকায় দিনের পর দিন এ অবস্থা চলে আসছে বলে সাধারণ গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন। পরিস্থিতির উন্নতিতে বিদ্যুৎ বিভাগের সংশ্লিষ্টদের নামে মাত্র রুটিন ওয়ার্ক ছাড়া বাস্তবে কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছে না। সর্বশেষ গত শনিবার থেকে গতকাল সোমবার বিকেল পর্যন্ত শহর ও শহরতলীতে ভয়াবহ বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিঊশন কোম্পানী লি. (ওজোপাডিকো) এর অধীন মোংলা বিদ্যুৎ সরবরাহ অফিস পরিচালিত হয়ে আসছে। গ্রামাঞ্চলে পল্লী বিদ্যুতের লাইন হলেও পৌর শহর এলাকায় এদের সরবরাহ লাইন থেকে গ্রাহকরা বিদ্যুৎ ব্যবহার করে থাকেন। মোংলা বিদ্যুৎ সরবরাহের অধীন প্রায় ৫ সহস্রাধিক গ্রাহক রয়েছে। এখান থেকে প্রতি মাসে গড়ে প্রায় ১২ কোটি টাকা বিদ্যুৎ বিভাগ আয় করে থাকে।
এদিকে মোংলা বিদ্যুৎ সরবরাহের বিদ্যুতের লাইন রক্ষণাবেক্ষনের দায়িত্বে নিয়োজিত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে গ্রাহক সেবায় উদাসীনতা, কর্তব্য অবহেলা ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ উঠেছে। এদের গাফিলতিতে গত কয়েক মাস ধরে মোংলা শহরে দিনে রাতে দফায় দফায় লাগাতার বিদ্যুৎ বিভ্রাট ঘটছে। সকাল, দুপুর, বিকেল, সন্ধ্যা, গভীর রাত, ভোর রাত এমন কোন সময় নেই যে বিদ্যুতের লুকোচুরি খেলা চলে। সামান্য বাতাস বা গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি শুরু হলেই বিদ্যুৎ চলে গিয়ে দীর্ঘ সময় সরবরাহ বন্ধ থাকছে। মাঝে মধ্যে লাইন মেরামত বা সংস্কারের নামে সারা দিন বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে রাখলেও পরে একই সমস্যা পুনরায় দেখা যায়।
কেন বিদ্যুৎ চলে গেলো তা জানতে চাইলে বিদ্যুৎ কর্মীরা জানায়, কোথায় ফল্ট হয়েছে তা খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না অথবা লাইন টিকছে না, তাই কখন সরবরাহ চালু হবে তা বলতে পারছি না। অভিযোগ উঠেছে, লাইনে ক্রুটি দেখা দিলে আবাসিক প্রকৌশলী, উপ সহকারী প্রকৌশলী ও লাইনম্যানরা মাঠ পর্যায়ে তদারকিতে আসেন না। দুজন ক্যাজুয়াল ষ্টাফ দিয়ে মাঠ পর্যায়ে তার দায়সারা ক্রটি চিহ্নিত ও তা মেরামতের কাজ করান।
এদিকে বিদ্যুতের অভাবে এইচএসসি পরীক্ষার্থীসহ শিক্ষার্থীদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। শিল্প কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হওয়াসহ ব্যবসা বাণিজ্যে স্থবিরতা নেমে এসেছে।
এ ব্যাপারে মোংলা বিদ্যুৎ সরবরাহের আবাসিক প্রকৌশলী মনোয়ার জাহিদ বলেন, গ্রীড ও আবহাওয়াজনিত কারণে মাঝে মধ্যে বিদ্যুৎ বিভ্রাট হচ্ছে। এ ছাড়া পর্যাপ্ত লোকবলের অভাবে লাইনে ক্রুটি মেরামতে বেগ পেতে হয়।