০৩:৩৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্যে নাখোশ ভারত

অনলাইন ডেস্ক।।
বিতর্কিত নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ‘উদ্বেগ’ প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মার্কিন উদ্বেগকে ‘ভুল স্থানে, ভুল তথ্য দেওয়া এবং অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে।
গত ১১ মার্চ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ভারত সরকার। নয়াদিল্লির ভাষ্য, ‘ভারতের বহুত্ববাদী ঐতিহ্য এবং দেশভাগ পরবর্তী ইতিহাস সম্পর্কে যাদের সীমিত ধারণা রয়েছে, তাদের লেকচার দেওয়ার চেষ্টা না করাই ভালো।’
মার্কিন পররাষ্ট্র দিপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার ‘নতুন আইনটি কীভাবে বাস্তবায়িত হবে’ তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ওয়াশিংটন ‘নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ’ করছে বলে মন্তব্য করার কয়েক ঘণ্টা পর ভারত থেকে এই বিবৃতি এলো।
নয়াদিল্লির মুখপাত্র জানিয়েছেন, সংখ্যালঘুদের সঙ্গে আচরণ নিয়ে উদ্বেগের কোনো ভিত্তি নেই।
গত ১১ মার্চ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ভারত সরকার। পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে আসা নথিবিহীন অমুসলিম অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার পথ প্রশস্ত করেছে এই আইন- যারা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে যান। আইনটিতে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বসবাসের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ থাকলেও মুসলিমদের কথা উল্লেখ নেই।
আইনটির সমালোচকরা প্রশ্ন তুলেছেন, কেনো আইনটিতে মুসলিমদের কথা উল্লেখ করা হয়নি। ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা এবং সকল সম্প্রদায়ের জন্য আইনের অধীনে সমান আচরণ ভারতের সংবিধানে আছে।
বিদেশি নাগরিকদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে- এমন আশঙ্কার মধ্যেই বিশেষ করে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী আসাম রাজ্যে বিক্ষোভ সত্ত্বেও ২০১৯ সালে ভারতীয় সংসদে আইনটি পাস হয়। আইনটি পাস হওয়ার পরে দেশব্যাপী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং কয়েক মাস ধরে তা অব্যাহত ছিল।
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আগামী ১৯ মার্চ তারা এই আইনের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি করবে। ২০১৯ সাল থেকে প্রায় ২০০টি সংযুক্ত পিটিশন আদালতে দায়ের করা হয়েছে, যা বিতর্কিত আইনটিকে চ্যালেঞ্জ করেছে।
২০২০ সালের মার্চ মাসে তৎকালীন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট দেশটির শীর্ষ আদালতে এই আইনের বিরুদ্ধে একটি হস্তক্ষেপের আবেদন দায়ের করেছিলেন। ভারত তখন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল যে, এই আইন তাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো বিদেশি পক্ষের অধিকার নেই।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

জীববৈচিত্রে সমৃদ্ধ সুন্দরবন সুন্দর থাকুক

যুক্তরাষ্ট্রের মন্তব্যে নাখোশ ভারত

Update Time : ১০:৫৬:১৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৬ মার্চ ২০২৪

অনলাইন ডেস্ক।।
বিতর্কিত নতুন নাগরিকত্ব আইন নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের ‘উদ্বেগ’ প্রত্যাখ্যান করেছে ভারত। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মার্কিন উদ্বেগকে ‘ভুল স্থানে, ভুল তথ্য দেওয়া এবং অযৌক্তিক’ বলে অভিহিত করেছে।
গত ১১ মার্চ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর করে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ভারত সরকার। নয়াদিল্লির ভাষ্য, ‘ভারতের বহুত্ববাদী ঐতিহ্য এবং দেশভাগ পরবর্তী ইতিহাস সম্পর্কে যাদের সীমিত ধারণা রয়েছে, তাদের লেকচার দেওয়ার চেষ্টা না করাই ভালো।’
মার্কিন পররাষ্ট্র দিপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার ‘নতুন আইনটি কীভাবে বাস্তবায়িত হবে’ তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে ওয়াশিংটন ‘নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ’ করছে বলে মন্তব্য করার কয়েক ঘণ্টা পর ভারত থেকে এই বিবৃতি এলো।
নয়াদিল্লির মুখপাত্র জানিয়েছেন, সংখ্যালঘুদের সঙ্গে আচরণ নিয়ে উদ্বেগের কোনো ভিত্তি নেই।
গত ১১ মার্চ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন কার্যকর করে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে ভারত সরকার। পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে আসা নথিবিহীন অমুসলিম অভিবাসীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার পথ প্রশস্ত করেছে এই আইন- যারা ২০১৪ সালের ৩১ ডিসেম্বরের আগে ভারতে যান। আইনটিতে হিন্দু, শিখ, বৌদ্ধ, জৈন ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের অনিবন্ধিত অভিবাসীদের বসবাসের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ থাকলেও মুসলিমদের কথা উল্লেখ নেই।
আইনটির সমালোচকরা প্রশ্ন তুলেছেন, কেনো আইনটিতে মুসলিমদের কথা উল্লেখ করা হয়নি। ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা এবং সকল সম্প্রদায়ের জন্য আইনের অধীনে সমান আচরণ ভারতের সংবিধানে আছে।
বিদেশি নাগরিকদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে- এমন আশঙ্কার মধ্যেই বিশেষ করে বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী আসাম রাজ্যে বিক্ষোভ সত্ত্বেও ২০১৯ সালে ভারতীয় সংসদে আইনটি পাস হয়। আইনটি পাস হওয়ার পরে দেশব্যাপী বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং কয়েক মাস ধরে তা অব্যাহত ছিল।
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আগামী ১৯ মার্চ তারা এই আইনের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি করবে। ২০১৯ সাল থেকে প্রায় ২০০টি সংযুক্ত পিটিশন আদালতে দায়ের করা হয়েছে, যা বিতর্কিত আইনটিকে চ্যালেঞ্জ করেছে।
২০২০ সালের মার্চ মাসে তৎকালীন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনার মিশেল ব্যাচেলেট দেশটির শীর্ষ আদালতে এই আইনের বিরুদ্ধে একটি হস্তক্ষেপের আবেদন দায়ের করেছিলেন। ভারত তখন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিল যে, এই আইন তাদের দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং জাতীয় সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে কোনো বিদেশি পক্ষের অধিকার নেই।