০৩:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫, ৩ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শিমুলের সৌন্দর্য্যে প্রকৃতি সেজেছে নতুন রূপে

প্রকাশ ঘোষ বিধান, পাইকগাছাঃ
ঋতুরাজ বসন্তে ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে পাইকগাছার শিমুল গাছ। শিমুল ফুলের রক্তিম রঙে প্রকৃতি সেজেছে এক রঙিন রূপে। গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে নয়নাভিরাম শিমুল ফুল। প্রকৃতিকে যেন সাজিয়েছে শিমুল ফুলের শোভায় এক নতুন রূপে। বাতাসে দোল খাচ্ছে শিমুল ফুলের রক্তিম আভা। গাছের ডালে ফুটে থাকা শিমুল ফুল মানুষের মনকে রাঙিয়ে তুলেছে। ফাল্গুন মাসজুড়ে শিমুল ফুল লাল পাপড়ি মেলে সৌন্দর্য বিলাচ্ছে। দূর থেকে হঠাৎ দেখলে ঠিক মনে হবে, কেউ লাল গালিচা বিছিয়ে রেখেছেন। প্রকৃতির এমন অপরূপ সৌন্দর্য মনে করিয়ে দেয় জীবনে বসন্ত এসেছে ফুলে ফুলে ভরে গেছে মন।
জানা যায়, শিমুল গাছে বসন্তের শুরুতেই ফুল ফোটে। চৈত্র মাসের শেষের দিকে ফল পুষ্ট হয়। বৈশাখ মাসের দিকে ফলগুলো পেকে শুকিয়ে গিয়ে বাতাসে আপনা-আপনিই ফল ফেটে প্রাকৃতিকভাবে তুলার সঙ্গে উড়ে উড়ে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়া বীজ থেকেই এর জন্ম হয়। প্রাকৃতিকভাবেই শিমুল গাছ বেড়ে উঠে। এছাড়া বালিশ, তোশক ও লেপ তৈরিতে শিমুল তুলার জুড়ি নেই। শিমুল গাছ কেবল সৌন্দর্যই বাড়ায় না এই গাছে রয়েছে নানা উপকারিতা এবং অর্থনৈতিকভাবেও বেশ গুরুত্ব বহন করে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে শিমুল ফুল। বসন্তের সঙ্গে-সঙ্গেই প্রকৃতি যেন নিজ রূপে সেজে উঠেছে। রাস্তার পাশে শিমুল ফুলের সৌন্দর্য দেখে অবশ্যই প্রকৃতিপ্রেমীদের নজর কাড়বে। পাখি আর মৌমাছিদের আনাগোনা চোখে পড়ার মত দৃশ্য। আর যেকোনো পথচারীকে দাঁড়িয়ে দেখতে বাধ্য করবেই। রাস্তার পাশে, পুকুরপাড়ে শিমুল গাছে ফুল বাতাশে দোল খাওয়ার এমন দৃশ্য পথচারিরাসহ দর্শনার্থীদের মন কাড়ছে।

ফাগ্লুনের আগমনে পলাশ, শিমুল গাছে লেগেছে আগুনে খেলা। লাল ফুলে পুরো এলাকায় সেজেছে রক্তিম আভায়। তবে গাছের তলায় ঝরে পড়ছে লাল শিমুল ফুল। আলাদা কোনো গন্ধ নেই, তবুও পথচারীদের বিমোহিত করে শিমুল ফুল। আর সূরে্যর খরতাপে সেদিকে তাকালে চোখে ভেসে ওঠে অনন্য সৌন্দর্য্য। এক দশক আগেও গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় গাছে গাছে শোভা বর্ধন করতো শিমুল ফুল। তবে কালের বিবর্তনে ঋতুরাজ বসন্তে এখন আর যেখানে-সেখানে চোখে পড়ে না রক্তলাল শিমুল গাছ। মূল্যবান এ গাছটি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে।

পরিবেশবাদী সংগঠন বনবিবির সভাপতি সাংবাদিক ও কলামিস্ট প্রকাশ ঘোষ বিধান বলেন, প্রকৃতিকে অপরূপ নাজে ফুটিয়ে তুলেছে শিমুল ফুল। গ্রাম বাংলার এই শিমুল গাছ আগে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এনে দিত। মানুষরা এই শিমুলের তুলা কুড়িয়ে বিক্রি করতো। অনেকে নিজের গাছের তুলা দিয়ে বানাতো লেপ, তোশক ও বালিশ। শিমুলের তুলা বিক্রি করে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছে। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন আর তেমন চোখে পড়ে না শিমুল গাছের। নির্বিচারে শিমুলগাছ নিধন ও চারা রোপণ না করার কারণে এ অঞ্চল থেকে শিমুল গাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে সরকারি নজরদারি বাড়ানো দরকার এবং সংরক্ষণে কৃষি বিভাগসহ পরিবেশবাদী সংগঠনকে এগিয়ে আসতে হবে।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

জীববৈচিত্রে সমৃদ্ধ সুন্দরবন সুন্দর থাকুক

শিমুলের সৌন্দর্য্যে প্রকৃতি সেজেছে নতুন রূপে

Update Time : ০৭:০৯:৪৫ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ মার্চ ২০২৪

প্রকাশ ঘোষ বিধান, পাইকগাছাঃ
ঋতুরাজ বসন্তে ফুলে ফুলে ছেয়ে গেছে পাইকগাছার শিমুল গাছ। শিমুল ফুলের রক্তিম রঙে প্রকৃতি সেজেছে এক রঙিন রূপে। গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে নয়নাভিরাম শিমুল ফুল। প্রকৃতিকে যেন সাজিয়েছে শিমুল ফুলের শোভায় এক নতুন রূপে। বাতাসে দোল খাচ্ছে শিমুল ফুলের রক্তিম আভা। গাছের ডালে ফুটে থাকা শিমুল ফুল মানুষের মনকে রাঙিয়ে তুলেছে। ফাল্গুন মাসজুড়ে শিমুল ফুল লাল পাপড়ি মেলে সৌন্দর্য বিলাচ্ছে। দূর থেকে হঠাৎ দেখলে ঠিক মনে হবে, কেউ লাল গালিচা বিছিয়ে রেখেছেন। প্রকৃতির এমন অপরূপ সৌন্দর্য মনে করিয়ে দেয় জীবনে বসন্ত এসেছে ফুলে ফুলে ভরে গেছে মন।
জানা যায়, শিমুল গাছে বসন্তের শুরুতেই ফুল ফোটে। চৈত্র মাসের শেষের দিকে ফল পুষ্ট হয়। বৈশাখ মাসের দিকে ফলগুলো পেকে শুকিয়ে গিয়ে বাতাসে আপনা-আপনিই ফল ফেটে প্রাকৃতিকভাবে তুলার সঙ্গে উড়ে উড়ে দূর-দূরান্তে ছড়িয়ে পড়া বীজ থেকেই এর জন্ম হয়। প্রাকৃতিকভাবেই শিমুল গাছ বেড়ে উঠে। এছাড়া বালিশ, তোশক ও লেপ তৈরিতে শিমুল তুলার জুড়ি নেই। শিমুল গাছ কেবল সৌন্দর্যই বাড়ায় না এই গাছে রয়েছে নানা উপকারিতা এবং অর্থনৈতিকভাবেও বেশ গুরুত্ব বহন করে।

উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে শিমুল ফুল। বসন্তের সঙ্গে-সঙ্গেই প্রকৃতি যেন নিজ রূপে সেজে উঠেছে। রাস্তার পাশে শিমুল ফুলের সৌন্দর্য দেখে অবশ্যই প্রকৃতিপ্রেমীদের নজর কাড়বে। পাখি আর মৌমাছিদের আনাগোনা চোখে পড়ার মত দৃশ্য। আর যেকোনো পথচারীকে দাঁড়িয়ে দেখতে বাধ্য করবেই। রাস্তার পাশে, পুকুরপাড়ে শিমুল গাছে ফুল বাতাশে দোল খাওয়ার এমন দৃশ্য পথচারিরাসহ দর্শনার্থীদের মন কাড়ছে।

ফাগ্লুনের আগমনে পলাশ, শিমুল গাছে লেগেছে আগুনে খেলা। লাল ফুলে পুরো এলাকায় সেজেছে রক্তিম আভায়। তবে গাছের তলায় ঝরে পড়ছে লাল শিমুল ফুল। আলাদা কোনো গন্ধ নেই, তবুও পথচারীদের বিমোহিত করে শিমুল ফুল। আর সূরে্যর খরতাপে সেদিকে তাকালে চোখে ভেসে ওঠে অনন্য সৌন্দর্য্য। এক দশক আগেও গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় গাছে গাছে শোভা বর্ধন করতো শিমুল ফুল। তবে কালের বিবর্তনে ঋতুরাজ বসন্তে এখন আর যেখানে-সেখানে চোখে পড়ে না রক্তলাল শিমুল গাছ। মূল্যবান এ গাছটি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে।

পরিবেশবাদী সংগঠন বনবিবির সভাপতি সাংবাদিক ও কলামিস্ট প্রকাশ ঘোষ বিধান বলেন, প্রকৃতিকে অপরূপ নাজে ফুটিয়ে তুলেছে শিমুল ফুল। গ্রাম বাংলার এই শিমুল গাছ আগে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এনে দিত। মানুষরা এই শিমুলের তুলা কুড়িয়ে বিক্রি করতো। অনেকে নিজের গাছের তুলা দিয়ে বানাতো লেপ, তোশক ও বালিশ। শিমুলের তুলা বিক্রি করে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছে। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন আর তেমন চোখে পড়ে না শিমুল গাছের। নির্বিচারে শিমুলগাছ নিধন ও চারা রোপণ না করার কারণে এ অঞ্চল থেকে শিমুল গাছ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। এ ব্যাপারে সরকারি নজরদারি বাড়ানো দরকার এবং সংরক্ষণে কৃষি বিভাগসহ পরিবেশবাদী সংগঠনকে এগিয়ে আসতে হবে।