১১:৫৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৬ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আবার ‘সেঞ্চুরি’ হাঁকিয়েছে পেঁয়াজ

  • Reporter Name
  • Update Time : ০৬:০৩:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৪
  • ২৮৪ Time View

ভরা মৌসুমেও অস্থির পেঁয়াজের বাজার। সোমবার এ অস্থিরতা আরও বেড়েছে। একদিনের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ ৩০ টাকা বেড়ে ‘সেঞ্চুরি’ হাঁকিয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটি। বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা দরে।

গত বছর একই সময় বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা। এমন পরিস্থিতিতে পণ্যটি কিনতে রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠছে প্রায় সব শ্রেণির ক্রেতার।  সোমবার রাজধানীর খুচরা বাজার ঘুরে এমন তথ্য জানা গেছে।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, একদিনের ব্যবধানে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ রাজধানীর খুচরা বাজারে ১৫-২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি কেজিপ্রতি আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা।

গত বছরের ৭ ডিসেম্বর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের নির্দেশনা দেয়। সেই অনুযায়ী, ৩১ মার্চ পর্যন্ত ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ থাকবে।

মূলত এমন পরিস্থিতির পর থেকেই দেশে পেঁয়াজ থাকার পরও হুহু করে বাড়তে থাকে দাম। পরিস্থিতি এমন হয় রাজধানীসহ সারা দেশে পেঁয়াজের কেজি সর্বোচ্চ ২০০-২৪০ টাকা ঠেকানো হয়। তবে এবারই প্রথম নীরব প্রতিবাদ হিসাবে বাড়তি দাম দিয়ে পেঁয়াজ কেনা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন ভোক্তা। ফলে পণ্যটি না কেনায় আড়ত থেকে সরবরাহ কমে যায়। অনেক গুদামেই নষ্ট হচ্ছে পেঁয়াজ। পরে দেশীয় নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গে দাম কমতে থাকে।

কিন্তু সোমবার রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯০-১০০ টাকা। যা একদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৭৫-৮০ টাকা। আর গত বছর একই সময় বিক্রি হয়েছে ৩৫-৪০ টাকা। এছাড়া প্রতিকেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকা। যা একদিন আগেই ৮৫-৯০ টাকা ছিল। আর গত বছর একই সময় বিক্রি হয়েছে ৪০-৪৫ টাকা।

নয়াবাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা মো. আলাউদ্দিন বলেন, বাজারে যেন কারও নিয়ন্ত্রণ নেই। যে যার মতো পণ্যের দাম নির্ধারণ করছে। আর সরকারসংশ্লিষ্টরা এসি রুমে বসে পণ্যের দাম বাড়বে না বলে গলা ফাটাচ্ছে। বাজারে তদারকি তো দূরের কথা, চোখ মেলে দেখছেও না কী হচ্ছে। ক্রেতাদের কী হাল হচ্ছে। সবাই সবার মতো করে প্রতিদিন একটি একটি করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে পরিস্থিতি অনিয়ন্ত্রিত করে তুলছে।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, বাজারে এক ধরনের বিশৃঙ্খলা চলছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে একাধিক প্রতিষ্ঠান আছে, তারপরও বাজারে নৈরাজ্য থামছে না। যখন যে পণ্যের দাম কমার কথা তখন সেই পণ্যেরও দাম বেড়ে যাচ্ছে। মুখে কঠোর ভ‚মিকা নেওয়ার কথা বললেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এজন্য অসাধুরা পণ্যের দাম বাড়াতে সাহস পাচ্ছে। আর প্রতারিত হচ্ছে ভোক্তা।

নয়াবাজারের বিক্রেতা মো. তুহিন বলেন, বাজারে মুড়ি কাটা শেষ। নতুন হালি পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়তে কিছুদিন সময় লাগবে। এই সুযোগে পাইকাররা আড়ত পর্যায়ে দাম বাড়িয়েছে। যে কারণে খুচরা বাজারেও দাম বেড়ে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। তিনি জানান, পাইকারিতে পাবনার প্রতিমণ পেঁয়াজ ৩২০০-৩৪০০ টাকা কেনা পড়ছে। যা আগে ২৮০০-৩০০০ টাকা ছিল। এই দাম মূলত গতকাল থেকেই বেড়েছে।

পেঁয়াজের হঠাৎ দাম বাড়ার বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সোমবারও রাজধানীসহ সারা দেশে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনা করেছে। এ সময় পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। অসাধু পন্থার প্রমাণ মিললেই আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আন্দোলনকারীদের সংযত থাকার আহ্বান নেপালের সেনাপ্রধানের

আবার ‘সেঞ্চুরি’ হাঁকিয়েছে পেঁয়াজ

Update Time : ০৬:০৩:৩৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৪

ভরা মৌসুমেও অস্থির পেঁয়াজের বাজার। সোমবার এ অস্থিরতা আরও বেড়েছে। একদিনের ব্যবধানে খুচরা পর্যায়ে কেজিপ্রতি সর্বোচ্চ ৩০ টাকা বেড়ে ‘সেঞ্চুরি’ হাঁকিয়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এই পণ্যটি। বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা দরে।

গত বছর একই সময় বিক্রি হয়েছে ৩৫ থেকে ৪৫ টাকা। এমন পরিস্থিতিতে পণ্যটি কিনতে রীতিমতো নাভিশ্বাস উঠছে প্রায় সব শ্রেণির ক্রেতার।  সোমবার রাজধানীর খুচরা বাজার ঘুরে এমন তথ্য জানা গেছে।

সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) বলছে, একদিনের ব্যবধানে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ রাজধানীর খুচরা বাজারে ১৫-২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি কেজিপ্রতি আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১৫ থেকে সর্বোচ্চ ৩০ টাকা।

গত বছরের ৭ ডিসেম্বর ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফরেন ট্রেড পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের নির্দেশনা দেয়। সেই অনুযায়ী, ৩১ মার্চ পর্যন্ত ভারত থেকে পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ থাকবে।

মূলত এমন পরিস্থিতির পর থেকেই দেশে পেঁয়াজ থাকার পরও হুহু করে বাড়তে থাকে দাম। পরিস্থিতি এমন হয় রাজধানীসহ সারা দেশে পেঁয়াজের কেজি সর্বোচ্চ ২০০-২৪০ টাকা ঠেকানো হয়। তবে এবারই প্রথম নীরব প্রতিবাদ হিসাবে বাড়তি দাম দিয়ে পেঁয়াজ কেনা থেকে মুখ ফিরিয়ে নেন ভোক্তা। ফলে পণ্যটি না কেনায় আড়ত থেকে সরবরাহ কমে যায়। অনেক গুদামেই নষ্ট হচ্ছে পেঁয়াজ। পরে দেশীয় নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গে দাম কমতে থাকে।

কিন্তু সোমবার রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯০-১০০ টাকা। যা একদিন আগে বিক্রি হয়েছে ৭৫-৮০ টাকা। আর গত বছর একই সময় বিক্রি হয়েছে ৩৫-৪০ টাকা। এছাড়া প্রতিকেজি আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ১০০-১২০ টাকা। যা একদিন আগেই ৮৫-৯০ টাকা ছিল। আর গত বছর একই সময় বিক্রি হয়েছে ৪০-৪৫ টাকা।

নয়াবাজারে পেঁয়াজ কিনতে আসা মো. আলাউদ্দিন বলেন, বাজারে যেন কারও নিয়ন্ত্রণ নেই। যে যার মতো পণ্যের দাম নির্ধারণ করছে। আর সরকারসংশ্লিষ্টরা এসি রুমে বসে পণ্যের দাম বাড়বে না বলে গলা ফাটাচ্ছে। বাজারে তদারকি তো দূরের কথা, চোখ মেলে দেখছেও না কী হচ্ছে। ক্রেতাদের কী হাল হচ্ছে। সবাই সবার মতো করে প্রতিদিন একটি একটি করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে পরিস্থিতি অনিয়ন্ত্রিত করে তুলছে।

কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান বলেন, বাজারে এক ধরনের বিশৃঙ্খলা চলছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে একাধিক প্রতিষ্ঠান আছে, তারপরও বাজারে নৈরাজ্য থামছে না। যখন যে পণ্যের দাম কমার কথা তখন সেই পণ্যেরও দাম বেড়ে যাচ্ছে। মুখে কঠোর ভ‚মিকা নেওয়ার কথা বললেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। এজন্য অসাধুরা পণ্যের দাম বাড়াতে সাহস পাচ্ছে। আর প্রতারিত হচ্ছে ভোক্তা।

নয়াবাজারের বিক্রেতা মো. তুহিন বলেন, বাজারে মুড়ি কাটা শেষ। নতুন হালি পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়তে কিছুদিন সময় লাগবে। এই সুযোগে পাইকাররা আড়ত পর্যায়ে দাম বাড়িয়েছে। যে কারণে খুচরা বাজারেও দাম বেড়ে পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। তিনি জানান, পাইকারিতে পাবনার প্রতিমণ পেঁয়াজ ৩২০০-৩৪০০ টাকা কেনা পড়ছে। যা আগে ২৮০০-৩০০০ টাকা ছিল। এই দাম মূলত গতকাল থেকেই বেড়েছে।

পেঁয়াজের হঠাৎ দাম বাড়ার বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সোমবারও রাজধানীসহ সারা দেশে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অভিযান পরিচালনা করেছে। এ সময় পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়ে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। অসাধু পন্থার প্রমাণ মিললেই আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।