১১:৪৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৭ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়েই জাতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: সালাহউদ্দিন

সবুজদিন ডেস্ক।।
অন্তর্বর্তী সরকারের নানা অর্জন ও ব্যর্থতার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, সরকারের সাফল্য থাকলেও যদি একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন সম্ভব না হয়, তবে সেই অর্জনের কোনো মূল্য থাকবে না। তিনি মনে করেন, সংবিধান সংশোধন, সংস্কার বাস্তবায়ন ও নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা—সবকিছু মিলিয়েই জাতীয় জীবনের প্রধান প্রশ্ন এখন নির্বাচন।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নাগরিক কোয়ালিশন আয়োজিত ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনের অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য আয়োজন করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। নির্বাচন কমিশন যে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে, তার কাজও সেই সময়সূচি অনুযায়ী এগোচ্ছে।
সংবিধান সংশোধনের প্রসঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, কেবল নির্বাচিত জাতীয় সংসদই সংশোধনী অনুমোদনের ক্ষমতা রাখে। অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় তা হলে তা আদালতে চ্যালেঞ্জ হতে পারে। তবে বিএনপি অতীতেই ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিল, যার বেশিরভাগই ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তার দাবি, সংস্কারগুলো আংশিকভাবে এখনই বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং বাকিগুলোও ধাপে ধাপে কার্যকর হবে।
সালাহউদ্দিন বলেন, “অনেকে বলেন বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবে না। কিন্তু বিএনপি যে সরকার গঠন করবে—এটা কি কেউ শপথ করে বলেছে? বাস্তবায়নের দায়িত্ব যারাই সংসদে থাকবে, তাদেরই। আমাদের দলের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুত সংস্কার বাস্তবায়ন অবশ্যই করতে হবে।”
তিনি আরও জানান, নির্বাচন কমিশনকে নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত রাখতে কমিশন গঠন প্রক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা, বিচার বিভাগের প্রতিনিধি, ডেপুটি স্পিকার ও বিরোধী দলের একজন প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের ব্যবস্থা করা হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সরকারের কিছু সাফল্য আছে, আবার কিছু ব্যর্থতাও আছে। তবে গণতন্ত্র রক্ষার সবচেয়ে বড় রক্ষাকবচ হবে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন, স্বাধীন বিচার বিভাগ, কেয়ারটেকার সরকারের ভূমিকা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা। এগুলো নিশ্চিত করতে পারলেই আর কোনো সংসদ ফ্যাসিবাদী আচরণ করতে পারবে না।”
নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ নিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে সংসদে নারীদের জন্য সরাসরি নির্বাচনে অন্তত ১০ শতাংশ কোটা রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে সামাজিক বাস্তবতার কারণে নারী অংশগ্রহণ এখনও সীমিত।
জুলাই গণহত্যার বিচার প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন, “এ বিচার যে সরকারই থাকুক থেমে থাকবে না। বিচার তার নিজস্ব বিচারিক প্রক্রিয়াতেই এগোবে।”
গোলটেবিল বৈঠকে অন্যান্য বক্তারাও মনে করেন, ভোট নিয়ে জনগণের দুশ্চিন্তা দূর করা সরকারের দায়িত্ব। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত না হলে জাতীয় ঐক্য ও গণতন্ত্রের অগ্রগতি সম্ভব নয়

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

জনপ্রিয় সংবাদ

ডেঙ্গুতে একদিনে ছয়জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৫৮৬ জন

সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়েই জাতির সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ: সালাহউদ্দিন

Update Time : ১২:৩১:০০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সবুজদিন ডেস্ক।।
অন্তর্বর্তী সরকারের নানা অর্জন ও ব্যর্থতার প্রসঙ্গ টেনে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেছেন, সরকারের সাফল্য থাকলেও যদি একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন সম্ভব না হয়, তবে সেই অর্জনের কোনো মূল্য থাকবে না। তিনি মনে করেন, সংবিধান সংশোধন, সংস্কার বাস্তবায়ন ও নির্বাচন কমিশনের স্বাধীনতা—সবকিছু মিলিয়েই জাতীয় জীবনের প্রধান প্রশ্ন এখন নির্বাচন।
বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে নাগরিক কোয়ালিশন আয়োজিত ‘সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রত্যাশা ও চ্যালেঞ্জ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সালাহউদ্দিন। তিনি বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচনের অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য আয়োজন করাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। নির্বাচন কমিশন যে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে, তার কাজও সেই সময়সূচি অনুযায়ী এগোচ্ছে।
সংবিধান সংশোধনের প্রসঙ্গে তিনি স্পষ্ট করে বলেন, কেবল নির্বাচিত জাতীয় সংসদই সংশোধনী অনুমোদনের ক্ষমতা রাখে। অন্য কোনো প্রক্রিয়ায় তা হলে তা আদালতে চ্যালেঞ্জ হতে পারে। তবে বিএনপি অতীতেই ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছিল, যার বেশিরভাগই ঐকমত্য কমিশনের আলোচনায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তার দাবি, সংস্কারগুলো আংশিকভাবে এখনই বাস্তবায়িত হচ্ছে এবং বাকিগুলোও ধাপে ধাপে কার্যকর হবে।
সালাহউদ্দিন বলেন, “অনেকে বলেন বিএনপি ক্ষমতায় গেলে এসব প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন করবে না। কিন্তু বিএনপি যে সরকার গঠন করবে—এটা কি কেউ শপথ করে বলেছে? বাস্তবায়নের দায়িত্ব যারাই সংসদে থাকবে, তাদেরই। আমাদের দলের পক্ষ থেকে প্রতিশ্রুত সংস্কার বাস্তবায়ন অবশ্যই করতে হবে।”
তিনি আরও জানান, নির্বাচন কমিশনকে নির্বাহী বিভাগের প্রভাবমুক্ত রাখতে কমিশন গঠন প্রক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেতা, বিচার বিভাগের প্রতিনিধি, ডেপুটি স্পিকার ও বিরোধী দলের একজন প্রতিনিধিকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ অন্যান্য কমিশনার নিয়োগের ব্যবস্থা করা হবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সরকারের কিছু সাফল্য আছে, আবার কিছু ব্যর্থতাও আছে। তবে গণতন্ত্র রক্ষার সবচেয়ে বড় রক্ষাকবচ হবে একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন, স্বাধীন বিচার বিভাগ, কেয়ারটেকার সরকারের ভূমিকা এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা। এগুলো নিশ্চিত করতে পারলেই আর কোনো সংসদ ফ্যাসিবাদী আচরণ করতে পারবে না।”
নারীর রাজনৈতিক অংশগ্রহণ নিয়ে তিনি বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে সংসদে নারীদের জন্য সরাসরি নির্বাচনে অন্তত ১০ শতাংশ কোটা রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে সামাজিক বাস্তবতার কারণে নারী অংশগ্রহণ এখনও সীমিত।
জুলাই গণহত্যার বিচার প্রসঙ্গে তিনি মন্তব্য করেন, “এ বিচার যে সরকারই থাকুক থেমে থাকবে না। বিচার তার নিজস্ব বিচারিক প্রক্রিয়াতেই এগোবে।”
গোলটেবিল বৈঠকে অন্যান্য বক্তারাও মনে করেন, ভোট নিয়ে জনগণের দুশ্চিন্তা দূর করা সরকারের দায়িত্ব। সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত না হলে জাতীয় ঐক্য ও গণতন্ত্রের অগ্রগতি সম্ভব নয়