০১:২৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গরমে পুড়ছে মোংলা, অতিষ্ঠ জনজীবন!

  • আলী আজীম
  • Update Time : ১০:২১:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫
  • ১০৯ Time View

আলী আজীম, মোংলা ।।
বৈশাখের খরতাপে পুড়ছে মোংলার প্রাণ-প্রকৃতি। দিন যত গড়াচ্ছে সূর্যের দাপট যেন ততই বেড়েই চলেছে। অব্যাহত তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। গ্রাম থেকে জেলা শহরের সর্বত্র হাঁসফাঁস অবস্থা। এ ছাড়া তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা প্রাণিকুলে।
তবে দাবদাহে সব থেকে বেশি করুণ অবস্থায় রয়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। ভ্যানচালক, দিনমজুর থেকে শুরু করে দিন আনা দিন খাওয়া প্রতিটি মানুষের জীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। চাইলেই গরমে বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ নেই তাদের। জীবিকার তাগিদে এই তীব্র গরমের মধ্যেও কষ্ট করতে হচ্ছে এরপরও গরমের কারণে কমেছে তাদের আয়ও। তীব্র গরম অনুভূত হওয়ায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। বিশেষ প্রয়োজনে সাধারণ মানুষ ছাতা মাথায় অথবা রিকশায় চলাচল করলেও সে সংখ্যা খুবই কম। স্বস্তিতে নেই সাধারণ ব্যবসায়ীরাও।
তীব্র গরমের কারণে দিনের বেলা বিপণিবিতানগুলোতে ক্রেতার দেখা মিলছে কম। খাদ্যাভ্যাসেও এসেছে পরিবর্তন। বাজারে বেড়েছে সবজির দাম। এদিকে তীব্র গরমের কারণে সকর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
মোংলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। আজ রবিবার (১১ মে) মোংলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বাড়তে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন মোংলা আবহাওয়া অফিস।
রাজীব নামে এক ভ্যানচালক বলেন, মনে হচ্ছে আগুন উড়ছে। রিকশা চালাতে কষ্ট হচ্ছে, জীবিকার তাগিদে বের হতে হচ্ছে। রাস্তার তাপের আঁচ মুখে লাগছে; মনে হচ্ছে মুখ পুড়ে যাচ্ছে।
সবজি বিক্রেতা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ঠা-ঠা রোদে গা পুড়ে যাচ্ছে। খরতাপে রাস্তা থেকেও বের হচ্ছে তাপ। এ পরিস্থিতিতে রাস্তার পাশে ছাতির তলায় বসে থাকাও যাচ্ছে না। খরিদ্দাররা ভোরের দিকে এসে সামান্য কেনাকাটা করে চলে যাচ্ছে।
কাপড় ব্যবসায়ী মো: রিপন হাওলাদার বলেন, ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ। গরমের কারণে দিনের বেলায় দোকানগুলোতে খুব একটা খরিদ্দাররা আসছেন না। সন্ধ্যায় সামান্য কয়েকজনের আনাগোনা দেখা যায়। শহরের সব বিপণিবিতানগুলোতে একই পরিস্থিতি। তবে চাহিদ বেড়েছে লেবুর সরবতের।
তীব্র গরম পরিস্থিতিতে সবাইকে বাইরে চলাচলে ও খাদ্যাভ্যাসে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো: শাহিন বলেন, বাইরে সাবধানতার সঙ্গে চলাচলের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে। তা না হলে পানি শূন্যতা থেকে জন্ডিস, ডায়রিয়াসহ নানা সমস্যার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনকি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে এই তীব্র গরমে।
তিনি বলেন, গরমের তীব্রতায় বিশেষ কিছু সতর্কতা মেনে চলা জরুরি। পানি শূন্যতা থেকে রক্ষা পেতে ঘন ঘন পানি খেতে হবে। ডায়রিয়া ও জন্ডিস থেকে রক্ষা পেতে ভাজাপোড়াসহ তেল জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

আন্দোলনকারীদের সংযত থাকার আহ্বান নেপালের সেনাপ্রধানের

গরমে পুড়ছে মোংলা, অতিষ্ঠ জনজীবন!

Update Time : ১০:২১:০২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১১ মে ২০২৫

আলী আজীম, মোংলা ।।
বৈশাখের খরতাপে পুড়ছে মোংলার প্রাণ-প্রকৃতি। দিন যত গড়াচ্ছে সূর্যের দাপট যেন ততই বেড়েই চলেছে। অব্যাহত তাপপ্রবাহে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। গ্রাম থেকে জেলা শহরের সর্বত্র হাঁসফাঁস অবস্থা। এ ছাড়া তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা প্রাণিকুলে।
তবে দাবদাহে সব থেকে বেশি করুণ অবস্থায় রয়েছেন শ্রমজীবী মানুষ। ভ্যানচালক, দিনমজুর থেকে শুরু করে দিন আনা দিন খাওয়া প্রতিটি মানুষের জীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ। চাইলেই গরমে বিশ্রাম নেয়ার সুযোগ নেই তাদের। জীবিকার তাগিদে এই তীব্র গরমের মধ্যেও কষ্ট করতে হচ্ছে এরপরও গরমের কারণে কমেছে তাদের আয়ও। তীব্র গরম অনুভূত হওয়ায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না। বিশেষ প্রয়োজনে সাধারণ মানুষ ছাতা মাথায় অথবা রিকশায় চলাচল করলেও সে সংখ্যা খুবই কম। স্বস্তিতে নেই সাধারণ ব্যবসায়ীরাও।
তীব্র গরমের কারণে দিনের বেলা বিপণিবিতানগুলোতে ক্রেতার দেখা মিলছে কম। খাদ্যাভ্যাসেও এসেছে পরিবর্তন। বাজারে বেড়েছে সবজির দাম। এদিকে তীব্র গরমের কারণে সকর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
মোংলা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, কয়েকদিন মৃদু থেকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বিরাজ করছে। আজ রবিবার (১১ মে) মোংলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৭ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বাড়তে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন মোংলা আবহাওয়া অফিস।
রাজীব নামে এক ভ্যানচালক বলেন, মনে হচ্ছে আগুন উড়ছে। রিকশা চালাতে কষ্ট হচ্ছে, জীবিকার তাগিদে বের হতে হচ্ছে। রাস্তার তাপের আঁচ মুখে লাগছে; মনে হচ্ছে মুখ পুড়ে যাচ্ছে।
সবজি বিক্রেতা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, ঠা-ঠা রোদে গা পুড়ে যাচ্ছে। খরতাপে রাস্তা থেকেও বের হচ্ছে তাপ। এ পরিস্থিতিতে রাস্তার পাশে ছাতির তলায় বসে থাকাও যাচ্ছে না। খরিদ্দাররা ভোরের দিকে এসে সামান্য কেনাকাটা করে চলে যাচ্ছে।
কাপড় ব্যবসায়ী মো: রিপন হাওলাদার বলেন, ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ। গরমের কারণে দিনের বেলায় দোকানগুলোতে খুব একটা খরিদ্দাররা আসছেন না। সন্ধ্যায় সামান্য কয়েকজনের আনাগোনা দেখা যায়। শহরের সব বিপণিবিতানগুলোতে একই পরিস্থিতি। তবে চাহিদ বেড়েছে লেবুর সরবতের।
তীব্র গরম পরিস্থিতিতে সবাইকে বাইরে চলাচলে ও খাদ্যাভ্যাসে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো: শাহিন বলেন, বাইরে সাবধানতার সঙ্গে চলাচলের পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে। তা না হলে পানি শূন্যতা থেকে জন্ডিস, ডায়রিয়াসহ নানা সমস্যার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনকি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে এই তীব্র গরমে।
তিনি বলেন, গরমের তীব্রতায় বিশেষ কিছু সতর্কতা মেনে চলা জরুরি। পানি শূন্যতা থেকে রক্ষা পেতে ঘন ঘন পানি খেতে হবে। ডায়রিয়া ও জন্ডিস থেকে রক্ষা পেতে ভাজাপোড়াসহ তেল জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।